মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার ওপর দীর্ঘদিন ধরে আরোপিত বেশিরভাগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার জারি করা এক নির্বাহী আদেশে তিনি জানান, সিরিয়ায় নতুন নেতৃত্ব আসার পর দেশটির রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতিতে “মৌলিক পরিবর্তন” এসেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে একটি বড় মোড়।

কি আছে সিদ্ধান্তে?
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণার মূল দিকগুলো হলো:

১ জুলাই ২০২৫ থেকে সিরিয়ার ওপর বুশ ও ওবামা প্রশাসনের আমলে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল হবে।
এসব নিষেধাজ্ঞা সিরিয়ার মানবাধিকার লঙ্ঘন ও রাষ্ট্রীয় সহিংসতার জবাবে নেওয়া হয়েছিল।

ঈধবংধৎ ঝুৎরধ ঈরারষরধহ চৎড়ঃবপঃরড়হ অপঃ (ঈধবংধৎ অপঃ) এবং ঈযবসরপধষ ধহফ ইরড়ষড়মরপধষ ডবধঢ়ড়হং ঈড়হঃৎড়ষ অপঃ-এর আওতায় থাকা নিষেধাজ্ঞাগুলোও স্থগিত করা হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, যেসব অপরাধের প্রেক্ষিতে এসব আইন চালু হয়েছিল, তা এখনকার সিরিয়া সরকারে দেখা যাচ্ছে না।

নতুন নেতৃত্বের ভূমিকায় ‘পরিবর্তনের বার্তা’
ট্রাম্প বলেন, “সিরিয়ায় এখন আহমাদ আল-শারা’র নেতৃত্বে একটি নতুন সরকার রয়েছে, যারা আগের দমন-পীড়নমূলক নীতির বদলে আন্তর্জাতিক দায়িত্বশীলতা ও স্বচ্ছতা গ্রহণ করেছে।”

এই ব্যাখ্যা দিয়েই হোয়াইট হাউস নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে।

যা বহাল থাকছে বা সম্প্রসারিত হয়েছে:
যদিও নিষেধাজ্ঞার বড় অংশ প্রত্যাহার করা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঊীবপঁঃরাব ঙৎফবৎ ১৩৮৯৪-কে বিস্তৃত করেছেন, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্র এখনও নির্দিষ্ট অপরাধের ভিত্তিতে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে। লক্ষ্য করা হবে:

যুদ্ধাপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের

ক্যাপ্টাগন (এক ধরনের অবৈধ মাদক) পাচারকারীদের

আসাদ সরকারের আমলে সংঘটিত গুম ও নিখোঁজের ঘটনায় জড়িতদের

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:
এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

সমর্থকরা বলছেন, এটি বাস্তবভিত্তিক একটি কূটনৈতিক পদক্ষেপ এবং সিরিয়ার পুনর্গঠনে সহায়ক হবে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে ‘অকালীন’ ও ‘জবাবদিহির অভাবজনিত’ হিসেবে আখ্যা দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সিরিয়া সংকটে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ও অবস্থান নিয়ে বহু বছর ধরে বিতর্ক চলেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত দেশটির জন্য এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে — যেখানে কূটনৈতিক স্বার্থ, নিরাপত্তা ও মানবাধিকার ইস্যুগুলোর ভারসাম্য খুঁজে পাওয়া হবে এক বড় চ্যালেঞ্জ।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version