মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিনের আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ সৌদি আরবের সঙ্গে বৈঠক করেছে ইরান। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) রিয়াদে সৌদি আরবের যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি

প্রায় ১২ দিন ধরে চলা সংঘাতের পর ২৫ জুন ইরান যুদ্ধবিরতিতে যায় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে। এরপর ৮ জুলাই এই প্রথমবারের মতো সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা যায়, এই বৈঠকে মূল আলোচনা হয় ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ও মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক অস্থিরতা ঘিরে।

ধন্যবাদ ও আশার বার্তা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম X-এ এক পোস্টে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে,

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের সময় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন আব্বাস আরাগচি।

উত্তরে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন,

“আমরা আশা করি এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা আনবে।”

তিনি আরও প্রতিশ্রুতি দেন,

“যেসব দেশের সঙ্গে ইরানের বিরোধ রয়েছে, তা কূটনৈতিকভাবে সমাধানে সৌদি আরব সহযোগিতা করবে।”

যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সংঘাত ও ইসরায়েলি হামলা

মূলত ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান দ্বন্দ্ব এবং তাতে ইসরায়েলি আগ্রাসনের ঘটনাগুলো ঘিরেই সাম্প্রতিক উত্তেজনা শুরু হয়।

গত ১২ জুন ওমানে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সংলাপ চলার মধ্যেই ইসরায়েল তেহরানসহ ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর বিমান হামলা চালায়। এরপর ১১তম দিনে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি মাঠে নামে এবং ফার্দো, নানতাজ ও ইসফাহানের স্থাপনায় হামলা করে।

পরদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন।

এরপর থেকেই যুদ্ধ থেমেছে ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে, তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার সংলাপও থেমে গেছে

ইরান-সৌদি বৈরিতা ও সম্পর্ক পুনঃস্থাপন

ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি শুরু হয় ২০১৫ সাল থেকে, সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ এবং ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠীকে ইরানের সহায়তা ঘিরে।

একপর্যায়ে ২০১৬ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে রিয়াদ।

তবে চীনের মধ্যস্থতায়, ২০২৩ সালে দুই দেশ আবার কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করে, যা বর্তমানে নতুন কূটনৈতিক দ্বার উন্মোচনের সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version