গাজায় ত্রাণপ্রার্থীদের ওপর ‘অমানবিক হত্যাযজ্ঞ’ চালানোর অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যসহ ২৮টি দেশ। এসব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “গাজায় মানবিক বিপর্যয় নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে।”

এই বিবৃতিতে ইসরায়েলের ত্রাণ সরবরাহ পদ্ধতিকে “বিপজ্জনক ও অমানবিক” বলা হয়েছে। বিশেষ করে যখন খাদ্য ও পানির জন্য অপেক্ষা করা নিরীহ মানুষকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হচ্ছে — এমন দৃশ্য বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে।

ক্যাপশন: ‘অনাহারে কাঁদে শিশু, আর সেই শিশুকেই গুলি করে মারে ইসরায়েল?’ — প্রশ্ন তুলেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি।

প্রধান অভিযোগ কী? অসামঞ্জস্যপূর্ণ ত্রাণ বিতরণ খাদ্য ও পানির জন্য অপেক্ষা করা বেসামরিকদের গুলি করে হত্যা অপুষ্টিতে মৃত্যুর ঘটনা দ্রুত বাড়ছে

হামাস-শাসিত গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি:
শুধুমাত্র গত সপ্তাহেই খাবারের লাইনে থাকা অবস্থায় ১০০’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, আর অপুষ্টিতে মারা গেছেন আরও ১৯ জন।

🇬🇧 যুক্তরাজ্য যা বলছে: ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, “ইসরায়েলের নিরাপত্তার অধিকার রয়েছে, তবে এখনকার অভিযান বিশ্বমঞ্চে তাদের মর্যাদাকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।” গাজার জন্য অতিরিক্ত ৪০ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তাও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া:
তারা বিবৃতিকে “বাস্তবতা বিবর্জিত” ও “হামাসকে ভুল বার্তা দেওয়ার মতো” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের দাবি, ত্রাণ সরবরাহ ব্যাহত করছে হামাস। ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানেটেরিয়ান ফাউন্ডেশন নামের নতুন সহায়তা ব্যবস্থা চালু করা হলেও জাতিসংঘ এটিকে অংশগ্রহণের জন্য নিরাপদ মনে করছে না।

দুঃখজনক পরিসংখ্যান:
নতুন সহায়তা ব্যবস্থার অধীনে গত ৮ সপ্তাহে ৬৭৪ জন নিহত

জাতিসংঘের রুটে আরও ২০১ জন নিহত

রবিবার এক ট্রাকে হামলায় ৬৭ জন নিহত

খাদ্য সংকটে ৯০ হাজার নারী ও শিশু ঝুঁকিতে

হাসপাতালে খাবার ও শিশুর দুধও নেই

❝ মানবতার লঙ্ঘন ❞
২৮ দেশের বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, “স্থায়ী বাস্তুচ্যুতি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন।”
এছাড়া তারা তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি ও রাজনৈতিক সমাধানের পথ তৈরির আহ্বান জানিয়েছে।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির হুঁশিয়ারি: “গাজায় ক্ষুধা এক ভয়াবহ স্তরে পৌঁছেছে। মানবিক সহায়তা ছাড়া মানুষ মরছে।”

গাজার এই মানবিক সংকট আজ সারা বিশ্বের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। একদিকে বোমা, অন্যদিকে ক্ষুধা—এর মাঝে পড়ে আছে লাখো শিশু, নারী, পুরুষ। এখন প্রশ্ন একটাই—এই যুদ্ধ থামবে কবে?

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version