মেঘলা আকাশের ফাঁক গলে রাতের তারা যেন ছুঁয়ে আসতে চাইছে এই পৃথিবীকে… আর সেই তারার মধ্য দিয়েই এবার ভারতের গ্রামেগঞ্জেও আসছে এলন মাস্কের ‘স্টারলিঙ্ক’!
তবে, এ সুখসন্ধান সবার জন্য নয়। মাত্র ২০ লক্ষ ভাগ্যবান মানুষই এই সুপারফাস্ট স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা পাবেন।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ভারত সরকার অবশেষে ছাড়পত্র দিয়েছে আমেরিকার প্রযুক্তি জায়ান্ট স্পেসএক্সের এই প্রকল্পকে। এখনো দেশে সেবা চালু না হলেও, অচিরেই ভারতের বাজারে পা রাখতে চলেছে স্টারলিঙ্ক।
এই খবরে স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত বিএসএনএল ও অন্যান্য দেশীয় টেলিকম কোম্পানিগুলো। কিন্তু সরকারের বক্তব্য, চিন্তার কোনও কারণ নেই।
সোমবার, কেন্দ্রীয় টেলিকম প্রতিমন্ত্রী পেম্মাসানি চন্দ্রশেখর জানিয়ে দেন, স্টারলিঙ্কের সর্বোচ্চ গ্রাহক সীমা হবে ২০ লক্ষ। ও তাদের ইন্টারনেট গতি হবে সর্বোচ্চ ২০০ এমবিপিএস। তাঁর দাবি, এতটুকু গতির পরিষেবা বড় ধরনের প্রতিযোগিতার ঝুঁকি তৈরি করবে না।
তবে, এই পরিষেবার মূল আকর্ষণ অন্য জায়গায়—প্রান্তিক ও দুর্গম এলাকাগুলিতে যেখানে এখনো ফাইবার ব্রডব্যান্ড পৌঁছায়নি, সেখানেও স্টারলিঙ্ক পৌঁছতে পারবে সহজে। পাহাড়, বনাঞ্চল কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়েও সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে না।
এটাই স্টারলিঙ্কের আসল শক্তি—একটি নিরব, অথচ দৃঢ় ‘রিটার্ন ফ্রম দ্য আন্ডারওয়ার্ল্ড’ মুহূর্ত। যেখান থেকে ফেরা যায় কেবল প্রযুক্তির ভরসায়।
তবুও প্রশ্ন উঠছে—২০ লক্ষই বা কেন? সরকারি সূত্র বলছে, স্টারলিঙ্কের বর্তমান সক্ষমতা সীমিত, আর স্যাটকম প্রযুক্তির খরচ সাধারণ টেলিকমের তুলনায় অনেক বেশি।
বিশ্বজুড়ে ১০০টিরও বেশি দেশে এই পরিষেবা চালু। ভারতের দুই প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও ভুটানেও মাসে গড়ে ৩,০০০ থেকে ৪,২০০ টাকা খরচ হয়। ফলে ভারতে স্টারলিঙ্ক ব্যবহারে খরচ পড়তে পারে মাসে ৩,০০০ থেকে ৩,৫০০ টাকার মতো।
তো, দেশের প্রতিটি কোণায় যখন ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে লড়াই, তখন এই ২০ লক্ষ গ্রাহকের কাহিনি যেন নতুন এক সূর্যোদয়… কিন্তু, সেই সূর্য কাদের আঙিনায় আলো ফেলবে, সেটা সময়ই বলবে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version