ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির বলেছেন, ছাত্রদল মনে করে—যারা জাতীয় সংগীতের চেতনা ধারণ করে না এবং সাধারণ মানুষকে জাতীয় সংগীত গাইতে বাধা দেয়, তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের ঐক্য সম্ভব নয়।

বুধবার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) টিএসসিসিতে শাখা ছাত্রদল আয়োজিত জুলাই শহীদ স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, গত কয়েক মাস আগে শাহবাগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে একটি আন্দোলন হয়েছিল। সেখানে বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে ছাত্রশিবিরও ছিল। তারা সেখানে বলল, আমরা আন্দোলন করবো ভালো কথা কিন্তু কোনো জাতীয় সংগীত গাইতে পারবো না। যারা জাতীয় সংগীত গাইতে বাধা দেয় সেরকম কোনো ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে কীভাবে ঐক্য হতে পারে আমি বুঝতে পারি না।

তিনি বলেন, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা যদি কোনো ছাত্রলীগ কর্মীকে পুলিশের হাতে তুলে দিত, তাহলে শিবিরের সদস্যরা গিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনত। এটি ছিল তাদের একটি কৌশল। সেই কৌশলের অংশ হিসেবেই তারা আগে ছাত্রলীগে যুক্ত ছিল, আর এখন শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করছে।

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আমরা এমন চিত্র গাজীপুরে দেখেছি, চকবাজার দেখেছি, চট্টগ্রামে দেখেছি যারা আগে ছাত্রলীগ করতো এখন তারা শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। এছাড়াও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা দেখেছি ছাত্রলীগের দুর্ধর্ষ ক্যাডার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সোহরাওয়ার্দী হল শাখা শিবিরের সভাপতি।

সভায় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি মো. জহির রায়হান আহমেদ বলেন, গতবছর চতুর্থদিনের মতো কারফিউ ছিল এবং সারাদেশের ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। আজকের এই দিনে আমরা কেউই বাসা বাড়িতে থাকতে পারিনি। আমাদের প্রত্যেকের বাসায় তল্লাশি চালিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এই জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান কিন্তু একদিনে রচনা হয়নি। দীর্ঘ সময়ের পরিক্রমায় দীর্ঘ শ্রম-ঘামের বিনিময়ে এই জুলাই এসেছে।

সভাপতির বক্তব্যে রাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ৫ আগস্টের পর আমরা যে প্রত্যাশা নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছিলাম বাংলাদেশে ইসলামি ছাত্রশিবির এবং জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সুন্দর রাজনীতি যেভাবে নষ্ট করেছে, তা বিগত সময়ে কখনো হয়নি। আজকে যখনই দেখবেন বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজমান, দেশের মানুষের অশান্তি তখনই দেখবেন দরজার পেছনের যে চেহারাটা তারই নাম বাংলাদেশ জামায়তে ইসলামী, ছাত্রশিবিরের নেতারা জড়িত।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ এবং ঢাকায় বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতদের স্মরণে দোয়া করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্মআহ্বায়ক সরদার রাশেদ আলীর সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়করা বক্তব্য দেন।

এ সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম, ইউট্যাবসহ বিভিন্ন বিএনপিপন্থি সংগঠনের শিক্ষকগণ এবং রাজশাহী শহরের বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version