ধ্বংসস্তূপের ভেতরেই নতুন স্বপ্ন খুঁজছে গাজার মানুষ। যুদ্ধ থেমে গেলেও তাদের কষ্টের যেন শেষ নেই। পুরো উপত্যকায় ছড়িয়ে আছে ইট, পাথর, কংক্রিট ও লোহার বিশাল স্তুপ—যেগুলো সরাতে অবরুদ্ধ শহরের বাসিন্দাদের লেগে যেতে পারে দীর্ঘ কয়েক বছর।

গাজা উপত্যকার মানুষের জীবনের দুই বছর কেটেছে ভয়াবহ দুঃস্বপ্নে। দুর্বিসহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছে সেখানকার শিশুরাও। প্রাণ বাঁচাতে বাড়িঘর ছেড়ে একাধিকবার পালাতে হয়েছে নিরীহ বাসিন্দাদের। ছুটে বেড়াতে হয়েছে গাজার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।

তবে যুদ্ধবিরতি অবশেষে কার্যকর হলেও সেখানে দুর্দশার শেষ নেই। কারণ ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর তাণ্ডবে পুরো গাজা এখন ধ্বংসস্তূপের নগরী।

স্কুল-কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ, হাসপাতাল কোনো কিছুই রক্ষা পায়নি ইসরাইলি বাহিনীর বোমার আঘাত থেকে। ঝরে গেছে ৬৭ হাজারের বেশি তাজা প্রাণ। ইউনিসেফ জানিয়েছে, এর মধ্যে শিশু রয়েছে ২০ হাজারের বেশি। এছাড়া আহত বা পঙ্গু হয়েছে ৪০ হাজারের বেশি শিশু। ধ্বংসস্তূপে নিখোঁজ রয়েছেন বহু মানুষ।

অবরুদ্ধ গাজার পানির লাইন, সুয়ারেজ লাইন, বিদ্যুৎ সংযোগ, মোবাইল নেটওয়ার্ক কোনো কিছুই অক্ষত নেই। এমনকি সেখানকার জেলেদেরকে সাগর থেকে মাছ ধরার সুযোগও দেয়নি ইসরাইলি বাহিনী। তীব্র খাদ্য ও ওষুধ সংকটে ভুগছেন বাসিন্দারা। ৫৫ হাজারের বেশি গর্ভবতী নারী রয়েছেন চরম ঝুঁকিতে।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার চারদিকে ছড়িয়ে থাকা ধ্বংসস্তূপ সরাতে লেগে যেতে পারে দীর্ঘ কয়েক বছর। এখনও অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।

চরম সংকটের মাঝেও যুদ্ধবিরতির পর ধীরে ধীরে নিজ ঘরে ফিরছেন গাজার বাসিন্দারা। ধ্বংসের চিহ্নের মধ্যেই তারা খুঁজে নিচ্ছেন টিকে থাকার আশাবাদ, নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রেরণা।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version