নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতন বৈষম্য দূরীকরণ এবং টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানসহ ছয় দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটি জানিয়েছে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মস্থলে ফিরে যাবেন না।
এ সিদ্ধান্তের ফলে আগামী ১ অক্টোবর থেকে সারা দেশের প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার আউটরিচ ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে। একইসঙ্গে ১২ অক্টোবর শুরু হতে যাওয়া জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য রিপোর্টিং কার্যক্রমও স্থগিত থাকবে।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে এ ব্যাপারে স্মারকলিপি জমা দেন হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
সংগঠনটির অভিযোগ, দেশের তৃণমূল পর্যায়ে শিশুদের প্রাণঘাতী ১০টি রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে স্বাস্থ্য সহকারীরা বছরের পর বছর কাজ করলেও এখনও তারা টেকনিক্যাল পদমর্যাদা থেকে বঞ্চিত। এতে সরকারি অন্যান্য কর্মচারীদের তুলনায় তারা চরম বেতন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ১৯৯৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ২০১৮ সালে স্বাস্থ্য সচিব ও মহাপরিচালক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ২০২০ সালে স্বয়ং স্বাস্থ্যমন্ত্রী রেজুলেশন গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু কোনো প্রতিশ্রুতিই বাস্তবায়িত হয়নি।
বাংলাদেশ হেলথ এসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন বলছে, তারা বহু বছর ধরে শুধু আশ্বাস শুনে যাচ্ছেন। এ কারণে এবার দাবি পূরণ না হলে টিকাদান কর্মসূচি চালু রাখা সম্ভব হবে না।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় দাবি আদায় পরিষদের সদস্য সচিব মো. ফজলুল হক চৌধুরী বলেন, আমরা শুধু আশার বাণীই শুনে যাচ্ছি। তাই ছয় দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যেতে বাধ্য হবো।
আশা করছি, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বৈষম্যের শিকার ২০ হাজার স্বাস্থ্য সহকারীর দাবি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসবে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় দাবি বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদের সভায় ৬৪ জেলার নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়।
এর মধ্যে রয়েছে- ২৮ সেপ্টেম্বর মহাপরিচালকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান, ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর জেলা সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান, ১ অক্টোবর থেকে ইপিআই কার্যক্রম, টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ও অন্যান্য কার্যক্রম বর্জন করে কর্মবিরতি পালন।