ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক এক সময়ের আলোচিত রাজনৈতিক অভ্যুত্থান ও তার পরবর্তী ক্ষমতা বণ্টন নিয়ে এবার মুখ খুললেন সংশ্লিষ্ট এক সাবেক কর্মী। তিনি দাবি করেছেন, সাদিক কায়েম নামের একজন নেতা কখনোই চাঁদাবাজি বা অন্য কোনো অবৈধ কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন না, বরং তিনি কেবল অভ্যুত্থানে তাঁর অবদান অনুযায়ী “যথাযথ হিস্যা” দাবি করেছিলেন।
প্রতিবেদকের কাছে দেওয়া এক বর্ণনায় তিনি বলেন, “সাদিক ভাই কখনোই নিজের জন্য অন্যায় কিছু চাননি। তিনি শুধু বলেছেন, ‘যা ত্যাগ করেছি, সেই অনুযায়ী হিস্যা চাই।'”
সূত্র মতে, অভ্যুত্থানের পর জামায়াত-শিবির ঘনিষ্ঠ এক সাবেক ঢাবি শিবির সভাপতি এবং আরেক শিবির নেতার স্ত্রী মূলত বিভিন্ন দপ্তরে ক্ষমতার অংশীদারিত্বের বিষয়টি পরিচালনা করতেন। আমলাতন্ত্র, সচিবালয় এমনকি মন্ত্রণালয়গুলোতেও নিজেদের মতাদর্শী লোক বসানোর ক্ষেত্রে এই দুই ব্যক্তি প্রধান ভূমিকা রাখেন বলে দাবি করা হয়।
প্রথমদিকে সবকিছু ঠিকঠাক চললেও, কিছুদিন পরই শুরু হয় বিরোধ। অভিযোগ উঠে, এই দুই ব্যক্তি আসিফ-নাহিদের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গায় সুপারিশ করছেন— অথচ তাঁদের আগাম অনুমতি ছাড়াই। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি আসিফ ও নাহিদ।
পরবর্তীতে এই অননুমোদিত সুপারিশ ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোতে চিঠি পাঠিয়ে পরিষ্কার নির্দেশনা দেওয়া হয়, যাতে এই দুই ব্যক্তি আসিফ-নাহিদের নাম ভাঙিয়ে কোনো তদবির করলে তা গ্রহণ না করা হয়।
চিঠি পাঠানোর কিছুদিনের মধ্যেই সাদিক কায়েম ওই কর্মীকে রাতভর বার্তা দিয়ে দেখা করতে বলেন। রাত চারটার দিকে ভিসি চত্বরে তাঁদের দীর্ঘ আলোচনা হয়, যা প্রায় ফজরের সময় পর্যন্ত চলে।
সাদিক কায়েমের মূল অভিযোগ ছিল, “অভ্যুত্থানে যারা সামনে ছিল, ত্যাগ করেছে, এখন তাদেরকেই পেছনে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। যারা কিছুই করেনি, তারাই এখন হিস্যা নিচ্ছে। মাহফুজ, নাহিদ, আসিফরা কথা রাখছে না। আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হচ্ছে!”
এখন দেখা যাচ্ছে, অভ্যুত্থানের পরের দ্বন্দ্ব ছিল শুধু আদর্শিক নয়, বরং হিস্যা ও স্বীকৃতির দ্বন্দ্ব— যেটা আজও তলে তলে বিরাজমান।