অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রায়ই তার অনুভূতি আর জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেন। সম্প্রতি একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি তুলে ধরেছেন জীবনের এক নির্মম অধ্যায়—কিভাবে সন্তানের বাবার বিশ্বাসঘাতকতায় তিনি চরম কষ্টের মধ্যেও খুঁজে পেয়েছেন নিজের আত্মশক্তি ও আত্মমর্যাদার পথ।
বাঁধন বলেন, তার জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষাগুলো এসেছে বই বা কারো উপদেশ থেকে নয়—এসেছে কষ্ট, অপমান আর বিশ্বাসঘাতকতার ভেতর দিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম থেকে। বিশেষ করে তার মেয়ের অভিভাবকত্ব মামলা চলাকালে, সাবেক স্বামী ও তার কিছু প্রভাবশালী সহযোগীদের সহযোগিতায় তার বিরুদ্ধে চলেছিল নোংরা অপপ্রচার।
বাঁধনের ভাষায়, ‘‘তারা আমাকে ‘খারাপ মা’ ও ‘লজ্জাহীন নারী’ প্রমাণের জন্য সংবাদমাধ্যমে মিথ্যা গল্প ছড়ায়। আমার ছবি ছাপানো হয় সর্বত্র, শিরোনামগুলো মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ। যাদের আপন ভাবতাম, অনেকেই চুপ থেকেছে। কিছু বিনোদন সাংবাদিক ও অচেনা শুভাকাঙ্ক্ষীরা পাশে দাঁড়ালেও, সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিয়েছিল সেই বিশ্বাসঘাতকতা।’’
তিনি লেখেন, ‘‘সে শুধু আমার সাবেক স্বামীই ছিল না, ছিল আমার সন্তানের বাবা। অথচ, সে আমাকে ধ্বংস করার পথ বেছে নিয়েছিল। আমি তাকে ভালোবাসতাম না, কিন্তু বিশ্বাস করতাম—আর সেই বিশ্বাসটাই সে নির্মমভাবে ভেঙে দিল।’’
এই সংকটের মুহূর্তে এক বন্ধুর বাড়িতে তিনি ভেঙে পড়েছিলেন। তখন সেই বন্ধুর স্বামীর একটি কথা তার জীবন বদলে দেয়: ‘‘তোমার সামনে দুটি পথ—প্রথমটি রাগ ও প্রতিশোধের, দ্বিতীয়টি নীরবতা, সত্য আর আত্মসম্মানের। প্রথম পথ স্বস্তি দিলেও ধ্বংস ডেকে আনবে, দ্বিতীয়টি মুক্তি দেবে।’’
বাঁধন বলেন, তিনি দ্বিতীয় পথটি বেছে নিয়েছিলেন। যদিও কঠিন ছিল, কিন্তু এই পথই তাকে শক্তি আর স্পষ্টতা দিয়েছে। এখন কেউ অপমান করলেও তিনি প্রতিক্রিয়া দেখান না। বরং নীরবতাই হয়ে উঠেছে তার আত্মরক্ষার সবচেয়ে বড় ঢাল।
তার ভাষায়, ‘‘যখন তারা নিজেদের রাগ আর ঘৃণায় ডুবে থাকে, আমি তখন এগিয়ে যাই শান্তি আর সম্মানের পথে।’’