মিয়ানমারের সহিংসতাপূর্ণ রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের মুখে গত ১৮ মাসে নতুন করে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।

শুক্রবার (১১ জুলাই) জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

ইউএনএইচসিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে প্রায় সাড়ে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর এটি সর্বোচ্চ সংখ্যক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা। নতুন আশ্রয়প্রার্থীদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ১ লাখ ২১ হাজার নতুন রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে এখনও অনেককে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি, যদিও তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাস করছেন। কক্সবাজারের মাত্র ২৪ বর্গকিলোমিটার এলাকায় প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার অবস্থানের ফলে এটি বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ শরণার্থী ক্যাম্পে পরিণত হয়েছে।

জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানায়, নতুন করে আরও রোহিঙ্গা আশ্রয় নেওয়ায় বিদ্যমান সহায়তা ব্যবস্থার ওপর চরম চাপ পড়ছে। খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ও আশ্রয়ের জন্য নতুন করে আগতরা অনেকাংশেই আগের রোহিঙ্গাদের ওপর নির্ভরশীল। ইতোমধ্যে দাতাগোষ্ঠী তহবিল সংকটে পড়ায় গুরুত্বপূর্ণ সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

ইউএনএইচসিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি আছে। ডিসেম্বরের মধ্যে খাদ্য সহায়তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এছাড়া, দুই লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর শিক্ষা বন্ধ হয়ে যাবে।

এমন সংকটে রোহিঙ্গাদের মাঝে হতাশা, নিরাপত্তাহীনতা ও অনিশ্চয়তা বাড়ছে জানিয়ে ইউএনএইচসিআর জানায়, রোহিঙ্গাদের অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রপথে অন্য দেশে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছে।

এ অবস্থায় রাখাইন রাজ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে না আসা পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের জন্য জীবন রক্ষাকারী সহায়তা যেন বন্ধ না করা হয় সেই দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version