বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুরা বাজারে সোহেল রানা (৪০) নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে ছাত্রদলের এক নেতার নেতৃত্বে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার বিকেলে ধামুরা বাজারে প্রকাশ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটে। জমি-সংক্রান্ত বিরোধ থেকেই এই হামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনার ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওতে এক যুবককে বলতে শোনা যায়, ‘সোজা কথা, যারে ভালো লাগবে তারে কোপামু। যারে যেখানে ভালো লাগবে তারে সেখানে কোপামু।’ তবে ওই যুবকের নাম বা পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
ভিডিওতে আরও দেখা গেছে, সড়কের ওপর পড়ে থাকা রক্তাক্ত একজনকে পাঁচ-ছয়জন যুবক নির্মমভাবে পেটাচ্ছেন। সেখানে এক নারীকে আহাজারি করতে শোনা যায়। নির্যাতনের শিকার সোহেল রানা (৪০), তাঁর বাবা আবু বক্কর (৭০) ও স্ত্রী নেহারু বেগমকে (৩০) বরিশালের শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলার নেতৃত্ব দেওয়া ধামুরা ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি সাব্বির ব্যাপারীও একই হাসপাতালে ভর্তি। নির্যাতনের শিকার সোহেল শোলক ইউনিয়নের ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
তিনি জানান, ধামুরা বাজারে তাঁর কাঠ, স্যানিটারি রিং-স্ল্যাব বিক্রি ও চায়ের দোকান আছে। হামলাকারীরা তাঁর প্রতিবেশী। তাঁর কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছিল। টাকা না দেওয়ায় বুধবার বিকেলে বাজারের দক্ষিণ পাশে ধামুরা-উজিরপুর সড়কে তাঁর দোকানের সামনে তাঁকে নির্মমভাবে পেটানো হয়। তাঁকে রক্ষা করতে গেলে বাবা আবু বক্কর ও স্ত্রী নেহেরু বেগম হামলার শিকার হন। আহত হয়ে তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর হামলাকারীরা তাঁর চায়ের দোকান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।
তবে অভিযুক্ত সাব্বিরের বাবা সেলিম ব্যাপারীর দাবি, পাশাপাশি বসতবাড়ি হওয়ায় সোহেল তাঁর ২ শতাংশ জমি দখলে রেখেছেন। এ নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছে। বুধবার বিকেলে তাঁর (সেলিম) স্ত্রী বিরোধীয় জমিতে গেলে সোহেল হামলা করে। মাকে আঘাতের খবর পেয়ে সাব্বির ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এ খবর জানতে পেরে সাব্বিরের ঘনিষ্ঠজন ছাত্রদলের কর্মীরা সোহেলকে পিটিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উজিরপুর থানার ওসি আ. সালাম জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বুধবার বিকেলে ধামুরা বাজারে দুই পক্ষের মারামারি হয়েছে। এক পক্ষের আহত সাব্বিরের পিতা সালাম ব্যাপারী পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
অপর পক্ষের সোহেল রানা মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন। ভিডিও চিত্র দেখে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেছে কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘আগে এজাহার করতে হবে।’