সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের আসরে ভারতের অনুপস্থিতিতে শিরোপার লড়াই আরও উন্মুক্ত হয়ে ওঠে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ নারী দল। টুর্নামেন্টজুড়ে দাপুটে খেলে শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছে সাগরিকার দল, প্রমাণ করেছে তাদের সক্ষমতা ও ধারাবাহিকতা।
ঘরের মাঠে পুরো টুর্নামেন্টে দাপটে দেখিয়েছে সাগরিকা-স্বপ্নারা। টুর্নামেন্টের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে নেপালকে ৪-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে সাফে অপরাজিত থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে চার গোল করেছেন সাগরিকা। পুরো টুর্নামেন্টে আট গোল করেছেন তিনি।
সোমবার (২১) বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ম্যাচের প্রথম ১০ মিনিটে আশা জাগানিয়া চারটি সুযোগ তৈরি করে বাংলাদেশ। কিন্তু সফলতা আসে একটি থেকে। অষ্টম মিনিটে দল এগিয়ে দেন সাগরিকা। মাঝমাঠে বলের দখলটা নিজেদের মধ্যে রেখে গুছিয়ে আক্রমণ করে বাংলাদেশ।
পূজা দাসের বাড়ানো বল নেপালের গোলমুখে বাড়ান স্বপ্না। আর সেই বল ধরে দারুণ প্রচেষ্টায় প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের চোখ ফাঁকি দিয়ে জালে জড়ান সাগরিকা। তিন ম্যাচে যেটা তার পঞ্চম গোল। এর ঠিক ১২ মিনিট পর ম্যাচে সমতা ফেরানোর সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি নেপাল।
গোলকিপার মিলি আক্তারের হাত ফসকে বের হওয়া বলে শট নেন পূর্ণিমা রাই। কিন্তু সেই শট রুখে দেন বেরসিক গোলপোস্ট। পোস্ট থেকে ফিরে আসা বলে হেড নেন নেপালের আরেক ফুটবলার। এবার আর মিস করেননি মিলি, সেই হেড সহজেই গ্লাভসবন্দী করেন বাংলাদেশ গোলকিপার।
এক গোলের লিড নেওয়া বাংলাদেশ প্রথমার্ধের শেষ পর্যন্ত একটু ধীরস্থির হয়ে লড়ে যায়। নেপালও চেষ্টা করে গোল শোধ করতে। কিন্তু বাংলাদেশের চৌকস রক্ষণের কারণে তাদের সেই আশা আর পূরণ হয়নি৷ উল্টো ৪৪ মিনিটে আরও একবার নেপালের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেন সাগরিকা। কিন্তু গোল না হওয়ায় ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেই লিড এনে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন সাগরিকা। কিন্তু তার সুযোগে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় বাঁ প্রান্তের পোস্ট। তবে ৫১ মিনিটে ঠিকই জোড়া গোলের দেখা পান তিনি। সেটিও দুর্দান্ত এক ফিনিশিংয়ে। উমেলা মারমার পাস ধরেই শরীরে সঙ্গে লেগে থাকা প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে পায়ের জাদুতে ধোঁকা দিয়ে ডান পায়ের দারুণ শটে নেপালের গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি।
৬ মিনিট পর পেয়ে যান টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকও। জয়নব বিবির পাসে গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বলকে দেন জড়িয়ে। ৬৩ মিনিটে নিজের চতুর্থ গোলটাও প্রায় পেয়ে গিয়েছিলেন সাগরিকা। তবে উমেলার দুর্দান্ত পাসটাকে গোলে পরিণত করতে পারেননি তিনি।
৭৭ মিনিটে চতুর্থ গোলটা পেয়ে যান সাগরিকা। টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় সর্বেোচ্চ ৮ গোল করেছেন তিনি। সর্বোচ্চ ১০ গোল করেছেন নেপালের পূর্ণিমা রাই। ম্যাচের ৮২ মিনিটে ব্যবধান কমানোর এক সুযোগ পেয়েছিল নেপাল।
তবে বাংলাদেশের গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি মিনা দেউবা। পরে আর কোনো গোল না হলে বিজয়ের উল্লাসে মাতেন বাংলাদেশে মেয়েরা। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো যুব পর্যায়ের টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।