সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশ ঘিরে দেখা দিয়েছে নজিরবিহীন জনসমাগম। সমাবেশ শুরুর ৬ ঘণ্টা আগেই উদ্যানে ভিড় করেন লাখো নেতাকর্মী ও সমর্থক। ভোরের আলো ফোটার আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। মাঠের বাইরে অবস্থান করছেন আরও হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক।

দেশের নানা প্রান্ত থেকে ট্রেন, বাস ও লঞ্চে করে রাজধানীতে এসে মিছিলসহকারে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করেন নেতাকর্মীরা। তাদের হাতে দেখা গেছে দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা, অনেকেই পরেছেন মনোগ্রামযুক্ত টি-শার্ট ও পাঞ্জাবি।

শনিবার (১৯ জুলাই) ভোর থেকে সোহরাওয়ার্দী ও আশপাশের এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থেকে আগত জামায়াতকর্মী সোহেল হাসান বলেন, “আমাদের উপজেলা থেকে প্রায় ৪০টি বাসে করে ৩০ হাজারের বেশি লোক এসেছি।” সিরাজগঞ্জ থেকে আসা কর্মী এরশাদ আলী জানান, “ট্রেন ও বাসে করে প্রায় ৩০-৪০ হাজার নেতাকর্মী এসেছেন। অনেকেই রাতেই উদ্যানে পৌঁছে গেছেন।”

২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক মাঠে:
সমাবেশ সফল করতে সারাদেশ থেকে আসা ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক সকাল থেকেই দায়িত্ব পালন করছেন। হাইকোর্ট, শাহবাগ, মৎস্যভবনসহ আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে রয়েছে স্বেচ্ছাসেবক টিম। তারা একই ধরনের ড্রেস পরে আগতদের গেট নির্দেশনা ও সহযোগিতা দিচ্ছেন।

মৎস্যভবন এলাকায় দায়িত্বে থাকা মাসুদুর রহমান বলেন, “প্রায় পুরো রাজধানীজুড়েই আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছে। শুধু উদ্যানে আছেন প্রায় ৬ হাজার জন।”

সমাবেশে আসতে পারে রাজনৈতিক বার্তা:
বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এই সমাবেশে। ধারণা করা হচ্ছে, ভোট ও জোট সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিতে পারেন শীর্ষ নেতারা।

জামায়াতের সাত দফা দাবিতে যা আছে:
১. অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড
২. সকল গণহত্যার বিচার
৩. প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার
৪. ‘জুলাই সনদ’ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন
৫. জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন
৬. সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন
৭. এক কোটিরও বেশি প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম জামায়াতে ইসলামী এককভাবে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version