দীর্ঘ প্রায় দেড় দশকের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সপরিবারে দেশে ফিরেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান, কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান এবং দলের নেতাকর্মী। 

বিমানবন্দরে সংক্ষিপ্ত আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারেক রহমান রাজধানীর পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দুপুর ১২টা ৩৫মিনিটে তিনি বিমানবন্দর থেকে সড়কপথে একটি বিশেষ বাসে করে ৩০০ ফিটের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীরা রাস্তার দুপাশে হাত নেড়ে তাকে স্বাগত জানান। ৩ ঘণ্টা ১৫ মিনিট পর মঞ্চে পৌঁছে উপস্থিত লাখো জনতার উদ্দেশে ভাষণ তিনি। 

এমতাবস্থায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা সাঈদ জামান শাওন। 

সেই চিঠিতে তিনি নিজেকে বাংলাদেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে তারেক রহমানের কাছে ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর রূপরেখা নির্মাণে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ তুলে ধরেছেন।

চিঠিতে সাঈদ জামান শাওন উল্লেখ করেন, রাজনীতিতে চাটুকার পরিবেষ্টন থেকে দূরে থাকা এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ বজায় রাখাই একজন নেতার প্রধান দায়িত্ব। 

তিনি বলেন, দেশের মানুষ এখন রাজনীতিবিদদের ফাঁপা বক্তব্যে ক্লান্ত। এই প্রেক্ষাপটে তারেক রহমানের সাম্প্রতিক অবস্থানকে ইতিবাচক বলে উল্লেখ করে বিএনপিকে রাজনৈতিক শিষ্টাচারের নতুন মানদণ্ড স্থাপনের আহ্বান জানান তিনি।

অভিনেতার মতে, দলের ভেতরে যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিলে তারেক রহমানের প্রতি জনআস্থা আরও দৃঢ় হবে।

এ ছাড়া জনদুর্ভোগ এড়াতে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়ে তারেক রহমানের সচেতনতাকে প্রশংসা করে ধন্যবাদ জানান তিনি।

চিঠির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশজুড়ে রয়েছে তরুণ সমাজের ভাবনা। শাওন বলেন, বর্তমান প্রজন্ম কোনো নির্দিষ্ট ‘মার্কা’, ‘নেতা’ বা ‘দল’-এর প্রতি অন্ধভাবে অনুগত নয়। 

তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ‘জুলাই’-এর আদর্শে বিশ্বাসী। ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে তরুণরা গত দুই দশকের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করতে সক্ষম বলেও তিনি উল্লেখ করেন। 

তার ভাষায়, তরুণ সমাজ সঠিক পথে থাকলে পাশে থাকবে, ভুল হলে সমালোচনাও করবে।

চিঠিতে ভিন্নমতকে সম্মান করা এবং সমালোচনার জবাব কথায় নয়, কাজের মাধ্যমে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শাওন।

ব্যক্তিগত আবেগের জায়গা থেকে তিনি উল্লেখ করেন, তারেক রহমান পিতা হারানোর বেদনা, ভাই হারানোর শোক, প্রিয়জনের জানাজায় অংশ নিতে না পারার যন্ত্রণা, শৈশবের ঘর হারানোর কষ্ট এবং দেশত্যাগের বেদনা গভীরভাবে বোঝেন।

এসব অভিজ্ঞতা তাকে নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠার দায়িত্ব দেয় বলেও তিনি মনে করেন।

চিঠির শেষে তারেক রহমানকে ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর স্থপতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের আহ্বান জানিয়ে লেখা হয়, দেশে আপনাকে স্বাগতম, স্যার।

পুনশ্চ অংশে অভিনেতা এও জানান, ভবিষ্যতে সংসদে নির্বাচিত হলে তারেক রহমানকে নিয়ে আবারও চিঠি লিখবেন।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version