ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর গুলি করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মূল আসামি এখনো গ্রেপ্তার না হলেও তিনি দেশেই অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. নজরুল ইসলাম।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার প্রধান অভিযুক্ত দেশেই রয়েছে। সন্দেহভাজন হামলাকারীদের পাসপোর্ট ব্লক করা হয়েছে এবং মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

নজরুল ইসলাম বলেন, হাদিকে গুলি চালানো ব্যক্তি এবং তার সহযোগী মোটাসাইকেল চালককে শনাক্ত করা হয়েছে। মোটরসাইকেলের পেছনে বসা ফয়সাল গুলি চালিয়েছে এবং আলমগীর মোটরসাইকেলের চালকের আসনে ছিলেন।
 
তিনি বলেন, চিহ্নিত দুজনকে গ্রেপ্তারের সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তারা যেন পালিয়ে যেতে না পারে, সেজন্য বিজিবি এবং সকল বন্দরকে সতর্ক করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার ৩ জনের বিষয়ে ডিএমপি জানায়, হামলার সময় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির মালিক এবং সীমান্ত পারাপার করার কাজে জড়িত এমন দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নজরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে যদি আজ বাদী হয়ে মামলা না করা হয়, তাহলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।

এর আগে, দুপুরে নির্বাচনী প্রাচারণা চালানোর সময় রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুমার নামাজ শেষে মতিঝিল দিক থেকে একটি কালো মোটরসাইকেলে করে দুজন ব্যক্তি আসে। মোটরসাইকেলের পেছনে বসা ব্যক্তি ক্লোজ রেঞ্জ (খুব কাছ) থেকে হাদির মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায়। হামলার পরপরই মোটরসাইকেলটি দ্রুতগতিতে এলাকা ত্যাগ করে। এরপর হাদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে আনা হয়েছে। সেখানে থেকে গুরুতর অবস্থায় তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। 

হাদির চিকিৎসায় নিয়োজিত মেডিকেল বোর্ড সবশেষ জানিয়েছে, ওসমান হাদির মস্তিষ্কের ফোলা আগের চেয়ে বেড়েছে, যা বেশ উদ্বেগজনক।

এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা গুলি চালানো ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন।

এছাড়া বিএনপি-জামায়তসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি হাদির ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আহ্বান জানিয়েছেন।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version