আইনের কঠিন মানদণ্ডে আবেগ বা অনুভূতির কোনো স্থান নেই; সেখানে বিচার হয় কেবল প্রমাণের ভিত্তিতে। এই কঠিন সত্যকে আবারও সামনে এনে এক যুগান্তকারী রায় ঘোষণা করেছে দিল্লি হাইকোর্ট। আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, শুধুমাত্র শারীরিক সম্পর্ক কথাটি উচ্চারণ করলেই তা ধর্ষণের প্রমাণ হিসেবে গণ্য হতে পারে না, কারণ আইনগতভাবে এই শব্দের নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা অপরিহার্য।

বিচারপতি মনোজ কুমার ওহরি-এর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ গত ১৭ অক্টোবর এক ব্যক্তিকে খালাস দিয়েছে, যিনি বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে যৌন সম্পর্কের অভিযোগে নিম্ন আদালতে ১০ বছরের সাজা পেয়েছিলেন।

আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলে, মামলায় অভিযোগকারী কিশোরী ও তার অভিভাবকরা কেবল অস্পষ্টভাবে ‘শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে’ বলে উল্লেখ করেছেন, কিন্তু এর অর্থ বা প্রকৃতির বিস্তারিত বর্ণনা দেননি।

হাইকোর্ট বলেছে, এভাবে অস্পষ্টভাবে বলা ‘শারীরিক সম্পর্ক’ কথাটি আইনগতভাবে ধর্ষণ প্রমাণের মানদণ্ডে পড়ে না। আদালত আরও জানিয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধি বা পকসো আইনে শারীরিক সম্পর্ক শব্দটি সংজ্ঞায়িত নয়, ফলে এর সঠিক অর্থ বিচার প্রক্রিয়ায় স্পষ্ট করা আবশ্যিক।

বিচারপতি ওহরি আরও মন্তব্য করেন, শিশু সাক্ষীর বক্তব্য অসম্পূর্ণ থাকলে আদালতের দায়িত্ব থাকে প্রশ্ন করে সত্য পরিষ্কার করা। আদালত কোনো অবস্থাতেই নির্বিকার থাকতে পারে না।

আইনজীবীরা মনে করছেন, এই রায় যৌন অপরাধ মামলায় প্রমাণের মানদণ্ডকে নতুনভাবে শক্তিশালী করবে এবং সমাজে প্রচলিত শব্দের আইনি ব্যাখ্যা যে ভিন্ন, সেই গুরুত্বপূর্ণ বার্তাটি প্রতিষ্ঠিত করবে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version