ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘জুলাই সনদ’ নিয়ে আলাদা গণভোট আয়োজনের বিষয়ে অনড় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

বুধবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের বিরতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জানান, তাদের দল আগামী নভেম্বরে, নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে, গণভোট আয়োজনের পক্ষে।

গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে হলে তা জটিলতা তৈরি করবে মন্তব্য করে জামায়াত নেতা ডা. তাহের বলেন, এখন আমরা সবাই একমত হয়েছি যে গণভোটের মাধ্যমেই জুলাই চার্টার এক্সেপ্টেড হবে… অনেকে বলেছেন গণভোট এবং জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে হবে, আমরা বলেছি—না, গণভোট একটি আলাদা বিষয়, জাতীয় নির্বাচন একটি আলাদা বিষয়।

তিনি বলেন, দুইটা ইলেকশন একসঙ্গে হওয়ার একটা ভালো দিক আছে, কিন্তু মন্দ দিক আছে অনেক বেশি… আপার হাউজের মতো কিছু ইস্যু আছে, যা আগামী নির্বাচনের অংশ হবে।

যদি একই দিন করেন, তাহলে জনগণ গ্রহণ করবে কি করবে না—এটা আনডিসাইডেড রয়ে যাবে। এ ছাড়া একই দিনে গণভোট ও নির্বাচন হলে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে মন্তব্য করে ডা. তাহের বলেন, আমরা সবাই আশা করছি ভালো নির্বাচন হবে। কিন্তু কোনো কারণে ইলেকশন যদি প্রশ্নবোধক হয়, তাহলে আপনার গণভোটের চার্টারও প্রশ্নবোধক হয়ে যাবে।

এক্ষেত্রে জামায়াতের এ নেতা সাম্প্রতিক ডাকসু এবং জাকসু নির্বাচনের কথা তুলে ধরে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত ৩টা ৪টা পর্যন্ত আমাদের টেনশনে ঘুম আসেনি… জাহাঙ্গীরনগর নির্বাচনে ৪৮ ঘণ্টা পরে রায় দিয়েছে… তাহলে দুইটা নির্বাচন আমাদের এরকম একটি আশঙ্কা দেয়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি আমাদের নিতে হবে, এটা আমি মনে করি মোটেই খুব বড় খরচ নয়, বরং জাতিকে স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবে।

বিএনপির ভিন্ন অবস্থান প্রসঙ্গে সৈয়দ তাহের বলেন, মূলত একটি দলই কিছুটা ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে বিএনপি। তারা মানুষকে বলছে সংস্কার মানে, কিন্তু আবার অফিশিয়ালি ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিচ্ছে। তাহলে জাতিকে পরিষ্কার করার জন্য তাদের বলতে হবে, তারা সংস্কার মানে কি মানে না।

তিনি বলেন, ‘নোট অব ডিসেন্ট’ কোনো সিদ্ধান্তের অংশ নয়, বরং ব্যক্তিগত মতামতের রেকর্ড হিসেবে থাকে। নোট অব ডিসেন্ট ইজ নট এ পার্ট অব ডিসিশন, ইউ মাস্ট মেক সিউর। কনসাস কমিটির পক্ষ থেকে যদি কোনো নোট অব ডিসেন্ট থাকত, তাহলে সেটা আমরা গণভোটে সাবজেক্ট করে মানুষের কাছে নিয়ে যেতাম, কিন্তু একটা দলের নোট অব ডিসেন্ট তো জাতির ভোটের ম্যান্ডেটের জন্য কোনো সাবজেক্ট হতে পারে না।

ডা. তাহের বলেন, যেমন হাইকোর্টে তিনজনের বেঞ্চে দুজন যা রায় দেয়, সেটাই রায়। আরেকজন নোট অব ডিসেন্ট দিতে পারে, সেটা ইতিহাসে রেকর্ড থাকবে। সুতরাং নোট অব ডিসেন্ট মানে সিদ্ধান্ত নয়।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version