অন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর কোর্টরুমে আজ সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে শুরু হলো সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে মামলার অন্যতম প্রধান সাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের জেরা।

সাবেক আইজিপি চৌধুরী মামুনকে জেরা করছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন, যারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে রয়েছেন। এর আগে, ২ সেপ্টেম্বর রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি শেষ করে আংশিকভাবে জেরা হয় মামুনের। এরপর ৩ সেপ্টেম্বর স্টেট ডিফেন্সের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাকি জেরার জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।

মামুন জবানবন্দিতে একাধিক বিষয় তুলে ধরেন। তিনি জানান, আওয়ামী লীগ শাসনামলে পুলিশের ভেতরে রাজনৈতিক প্রভাব ও গ্রুপিং লক্ষ্য করেছেন। একইসঙ্গে তিনি স্বীকার করেছেন, জুলাই–আগস্ট আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে গণহত্যা চালানো হয়েছে। নিজের দায় স্বীকার করে তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এ পর্যন্ত ৩৬ জন সাক্ষী আদালতে বক্তব্য দিয়েছেন। প্রত্যেকে দাবি করেছেন, জুলাই–আগস্টে হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গত ১০ জুলাই গঠন করা হয়। এই মামলায় পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগপত্রের দৈর্ঘ্য মোট ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠা। এর মধ্যে তথ্যসূত্র রয়েছে ২,০১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি ৪,০০৫ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ ২,৭২৪ পৃষ্ঠা।

এ মামলায় সাক্ষী হিসেবে মোট ৮১ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। এই মামলা শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি দেশের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যেখানে বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পথে এগোতে হচ্ছে।

আজকের জেরা তাই শুধু এক সাক্ষীর বক্তব্য নয়, বরং সেই ঘটনার পূর্ণ চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা, যা দেশের জনগণ ও ইতিহাসের সামনে দাঁড়াবে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version