যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় বহুল আলোচিত বৈঠক শুরু হতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। বৈঠকের ফলাফল কোন দিকে যাবে তা নিয়ে সাধারণ ইউক্রেনীয়দের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আস্থা রাখছেন।
বৈঠকে অংশ নিতে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে আলাস্কার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যাওয়ার আগে তিনি ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘বেশ ঝুঁকি আছে’। অন্যদিকে আলাস্কায় যাওয়ার পথে রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলের মাগাডান এলাকায় যাত্রাবিরতি নিয়েছেন পুতিন। সেখানে তিনি স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
আলাস্কা বৈঠকের আলোচ্য সূচি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী উড়োজাহাজে (এয়ারফোর্স ওয়ান) থাকা সাংবাদিকদের ব্রিফ করেছেন ট্রাম্প। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, ‘অঞ্চল বিনিময় নিয়ে আলোচনা হবে। কিন্তু তিনি এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ইউক্রেনের ওপর ছেড়ে দিতে চান। ’ ট্রাম্প আরও বলেছেন, আলাস্কায় তিনি ইউক্রেনের হয়ে বৈঠক করতে যাচ্ছেন না।
এরপর এক সাংবাদিক ট্রাম্পকে জিজ্ঞেস করেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে নিরাপত্তা সহায়তা দেবে কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেন, এটি সম্ভব। ন্যাটোর অংশ হিসেবে না হলেও ইউরোপ ও অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে মিলে একটি সম্ভাবনা আছে।
তবে ট্রাম্প রাশিয়াকে বাড়তি সুবিধা দিতে পারে বলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে। এ ধরনের শঙ্কার কথা জানিয়ে কিয়েভের বাসিন্দা ইরিনা কোজিরেভা বিবিসিকে বলেন, ‘আলাস্কায় বৈঠকের মাধ্যমে পুতিন যুদ্ধে যে অপরাধ করেছেন সেটির বৈধতা পেয়ে যাচ্ছেন।’
কিয়েভে মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করেছে শতাধিক মানুষ। সিএনএন জানিয়েছে, ওই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা ভূখণ্ড বিনিময় চান না। বরং বন্দি বিনিময় চান।
তবে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেছেন, পুতিন যুদ্ধ বন্ধে অস্বীকৃতি জানালে পরিণতি কঠোর হবে। এটা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে নয়, হাজারো মানুষের জীবন বাঁচানোর স্বার্থে করা হবে।
এদিকে ট্রাম্পের মতো জেলেনস্কিও আলাস্কার বৈঠককে উচ্চ ঝুঁকির বলে উল্লেখ করেছেন। এক্স পোস্টে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‘আমরা আমেরিকার ওপর ভরসা রাখছি। দোনেৎস্ক ও জাপোরিঝিয়ায় রাশিয়ার আগ্রাসন রোধে সেনা পাঠানো হচ্ছে। আলাস্কার বৈঠকে এ দুটি অঞ্চল আলোচনার কেন্দ্রে থাকতে পারে।’
আলোচিত এ বৈঠকের আগে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গেও কথা বলেছেন জেলেনস্কি। মাখোঁর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, আলাস্কার বৈঠক শেষ হলে জেলেনস্কি-মাখোঁ সাক্ষাৎ করবেন।
