রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ফের আলোচনায় ছাত্রলীগ নেত্রী সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী। গণিত বিভাগের ছাত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এই ঐশীর বিরুদ্ধে অভিযোগ—তিনি মাস্টার্সের মিডটার্ম পরীক্ষায় অংশ না নিয়েই পাস করেছেন!
এই অভিযোগে গত ২২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। তবে ছয় মাস পার হলেও এখনও প্রতিবেদন জমা পড়েনি। এতে উত্তেজিত সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রথম সেমিস্টারের মিডটার্ম পরীক্ষা থেকে। ঐশীর সহপাঠীরা জানিয়েছেন, তিনি পরীক্ষার হলে উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু ফলাফল প্রকাশে দেখা যায়, তিনি পাস করেছেন!
তদন্ত কমিটির কাজ দীর্ঘায়িত হওয়ায় প্রশাসনের নিরবতায় হতাশ শিক্ষার্থীরা বলছেন, এটা সরাসরি একটি শিক্ষা দুর্নীতি।
শুরুতে ঐশীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে জানান তিনি পরীক্ষা দিয়েছেন। তবে তার বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তব ঘটনার মিল পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক আরেক আলোচিত ইস্যু, ছাত্রলীগের হামলায় নিহত আবু সাঈদের ঘটনার পর থেকেই ঐশী রয়েছেন আত্মগোপনে।
অভিযুক্ত শিক্ষক ড. রুহুল আমিন, যিনি ঐশীর খাতা মূল্যায়নের দায়িত্বে ছিলেন, তাকে অর্থ দপ্তরের পরিচালকের পদ থেকে সরানো হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ নিয়ে ছাত্রদলও প্রতিবাদ জানিয়েছে। বেরোবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক আমিন আল-আমিন বলেন,
“যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়, তাদের নেত্রী কীভাবে পরীক্ষা না দিয়ে পাস করেন? তদন্ত হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না!”
তিনি আরও বলেন,
“আগেও অনেক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে, কিন্তু ফলাফল কিছুই হয়নি। শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের ওপর থেকে আস্থা হারাচ্ছে।”
এদিকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ড. তানজিউল ইসলাম জীবন জানিয়েছেন,
“প্রতিবেদন প্রস্তুত। দুই-এক দিনের মধ্যেই জমা দেওয়া হবে।”
তবে শিক্ষার্থীরা বলছে, “৬ মাস পরে প্রতিবেদন মানে শুধু সময়ক্ষেপণ নয়, এটা সুষ্ঠু বিচারের অন্তরায়ও হতে পারে।”
