জুলাই সনদ প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, বিএনপি বলছে, ‘এই সনদের কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’ কিন্তু আমাদের মত হলো, শুধু প্রতিশ্রুতির ওপর নির্ভর করলেই চলবে না। যদি আইনি ভিত্তি না থাকে, তাহলে এই সনদের কোনো মূল্য থাকবে না। এ কারণে আমরা নির্বাচন কমিশন ও সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ মামলা করব।
এ সময় আইনি ভিত্তি ছাড়া জুলাই সনদে জামায়াত স্বাক্ষর করবে না বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দ্বিতীয় ধাপের ২৩ দিনের সংলাপে দুপুরের বিরতিতে সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের এসব কথা বলেন।
সংলাপে সময় ব্যয় ও কঠোর পরিশ্রমের কথা উল্লেখ করে ডা. তাহের বলেন, আমরা এত কষ্ট করলাম, আপনারা কাভার করলেন; কিন্তু বাস্তবায়ন না হলে এসবের কোনো মূল্য থাকবে না। বাস্তবায়ন না হলে শপথ করারও কোনো মূল্য থাকে না। তাই বাস্তবায়নটাই মুখ্য।
তিনি বলেন, আইনি ভিত্তি ছাড়া এই চার্টার জিরো হবে। আমরা পরিষ্কার বলেছি, আইনগত ভিত্তি ছাড়া সই করব না। এই সরকারের মেয়াদেই এটি কার্যকর করতে হবে। কাল থেকেই এটা সম্ভব। আজ আমরা যে সংখ্যক ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেখেছি, তা আগের ২২ দিনে দেখিনি। তবুও এটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ। একজন ‘না’ বলতেই পারেন। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ পক্ষে থাকলে সেটা গ্রহণযোগ্যতা পায়।
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, আইনি ভিত্তি দেওয়া এখনই সম্ভব। অলটারনেটিভ আছে, উদাহরণ আছে। যারা বলছেন এটা এখন দেওয়া যাবে না, তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করছেন। আমরা আইনি ভিত্তি চাই। তা না থাকলে এই চার্টারে স্বাক্ষর করার অর্থ নেই। এমন সনদে সই করার আর না করার মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না।
ডা. তাহের আরও বলেন, আইনি ভিত্তি না দিলে যদি (পরবর্তী) সরকার বাস্তবায়নের পথে না এগোয়, তাহলে আমরা এই সংস্কার প্রক্রিয়াকে অসমাপ্ত মনে করব। সই করার পর যদি বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে এটা একধরনের প্রহসন। সুতরাং আমরা সরকার ও কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন নিজেদের ওয়াদা বাস্তবায়নের জন্য এখনই উদ্যোগ নেয়।
হুঁশিয়ারি দিয়ে ডা. তাহের বলেন, আমরা জাতির সঙ্গে আর কোনো তামাশা হতে দেব না। গত ৫৪ বছরের নির্বাচনী পদ্ধতিতে বাংলাদেশে দলীয়করণ, দখল, দূষণ, ভুয়া নির্বাচন, ভোটারবিহীন ঘোষণা ও রাতের নির্বাচনসহ নানা অপসংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। ফলে আমরা মনে করি, এখন সারা বিশ্বে প্রায় ৯০টি দেশে যেভাবে পিআর পদ্ধতি আছে, বাংলাদেশেও তা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি এখন আফ্রিকা, ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়া প্রতিটি মহাদেশেই আছে। গরিব-ধনী বা কালো-সাদার ভেদে নয়, এটি একটি বৈশ্বিক বাস্তবতা। এমনকি অনেক দেশ প্রতিবছর নতুনভাবে এই পদ্ধতি গ্রহণ করছে।
পার্থক্য করে ডা. তাহের বলেন, আমরা পিআর চাই এবং অধিকাংশ দলও পিআরের পক্ষে। উচ্চকক্ষ হলো একটা ‘ব্যালেন্স অব অথরিটি’। মূল আইন প্রণয়ন হবে নিম্নকক্ষে, আর উচ্চকক্ষ হবে গাইডিং ও কন্ট্রোলিং বডি।