দুর্নীতির অভিযোগে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের মেয়র একরেম ইমামোলুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রথমে তাঁকে আটক করা হয়, পরে আদালতের আদেশে মারমারা জেলে পাঠানো হয়।
ইমামোলুর গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তাল হয়ে ওঠে ইস্তাম্বুল। হাজার হাজার মানুষ রাজপথে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। টানা পাঁচদিন ধরে চলা এই বিক্ষোভে রোববার যোগ দেন মেয়রের স্ত্রী দিলেক কায়া ইমামোলু।
জনতার উদ্দেশ্যে দিলেক বলেন, “এরদোয়ানের সময় শেষ হয়ে এসেছে। এবার তিনি হারবেন।” তাঁর দাবি, একরেম ইমামোলুকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যা দেশের জনগণের সঙ্গেও একধরনের অবিচার। তিনি বলেন, এর দায় এরদোয়ানকেই নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, একরেম ইমামোলু প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত। ইস্তাম্বুলে মেয়র হিসেবে তিনি বরাবরই এরদোয়ানের বিরুদ্ধে লড়াই করে এসেছেন। সমর্থকদের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রোববার রাতে ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দিয়ে জানায়, “ইমামোলু ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের গ্রেপ্তার গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২০ বছর ধরে শাসন করেও এরদোয়ান বিরোধী মতকে সম্মান করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
ফ্রান্সের মতে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশ হিসেবে তুরস্কের উচিত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষা করা। বিরোধী রাজনীতি গণতন্ত্রের ভিত্তি, আর সেই ভিত্তি ধ্বংস হলে সম্পর্কেও ফাটল ধরবে।
ইমামোলুর সমর্থকেরা ইতিমধ্যে তুরস্কজুড়ে এক প্রতীকী ভোটের আয়োজন করেছেন। ব্যালট বাক্স বসানো হয়েছে বিভিন্ন শহরে। এতে সিএইচপির বাইরে থাকা মানুষদেরও অংশ নিতে আহ্বান জানানো হয়।
সিএইচপি দাবি করেছে, এই ভোটে প্রায় দেড় কোটি মানুষ অংশ নিয়েছেন। এতটাই সাড়া মেলে যে, ভোটের সময় তিন ঘণ্টা বাড়াতে হয়। তাঁদের ভাষ্য, এর মধ্যে এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ একরেম ইমামোলুর পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
২০১৯ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়া ইমামোলু গত বছর পুনরায় জয় পান। প্রতীকী ভোটের ফল জানার পর জেল থেকেই এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লেখেন, “মানুষ এরদোয়ানকে বার্তা দিয়েছে—এবার যথেষ্ট হয়েছে।”