বাংলাদেশি নাগরিক বলে অপবাদ দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের আটক করা হচ্ছে— এমন ঘটনায় হাই কোর্টে দ্রুত শুনানির আর্জি জানানো হয়েছে।
ওড়িশার পর এবার দিল্লিতেও ছয়জন বাঙালি শ্রমিককে আটকের অভিযোগ উঠে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) কলকাতা হাই কোর্টে হেবিয়াস কর্পাস মামলা দায়ের করা হয়।
বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ওড়িশার ঘটনাও একই ধরনের, তাই দু’টি মামলার শুনানি একসঙ্গে হবে। শুক্রবার হতে পারে শুনানি।
দিল্লিতে আটক ছয় শ্রমিক, পরিবারের অভিযোগ ‘জোর করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে’ বীরভূমের পাইকরের ছয় শ্রমিক দিল্লির কে. এন. কাটজু থানার আওতায় আটক হন ১৮ জুন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, আটক হওয়ার পরে শ্রমিকেরা ফোন করে বলেন— ‘বাংলাদেশি সন্দেহে’ তাঁদের আটক করেছে পুলিশ। পরে জানানো হয়, তাঁদের বিএসএফের হাতে তুলে দিয়ে বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ করা হয়েছে।
কিন্তু কোথা থেকে বা কীভাবে তাঁদের পাঠানো হয়েছে, সে বিষয়ে কোনও তথ্য দিচ্ছে না দিল্লি পুলিশ, এমন অভিযোগ করেছে শ্রমিকদের পরিবার।
সরকারি দপ্তরে যোগাযোগ, আদালতের দ্বারস্থ পরিবার
পরিবারগুলো বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শ্রম দফতর ও শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম-এর সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনাটি নিয়ে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ওড়িশা, গুজরাট, অসমেও বাঙালি শ্রমিকদের হয়রানি!
এর আগে ওড়িশায় পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকজন শ্রমিককে আটক ও নিখোঁজ করে রাখার অভিযোগ উঠে। অনেককে পরে রাজ্যে ফিরিয়ে আনা হলেও এখনও সবার বিষয়ে স্পষ্টতা নেই।
গুজরাটের সুরতে ‘বিনা অপরাধে’ বোলপুরের শেখ মোজাম্মেল নামে এক শ্রমিককে দীর্ঘক্ষণ আটক রাখে পুলিশ। পরে জেলা পুলিশের হস্তক্ষেপে ছাড়া পান তিনি।
এছাড়া কোচবিহারের দিনহাটার উত্তম ব্রজবাসীকে অসমে এনআরসি আইনে নোটিশ দেওয়া নিয়েও শোরগোল শুরু হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন,
“অসমে বিজেপি সরকার বেআইনিভাবে এনআরসি প্রয়োগ করে পশ্চিমবঙ্গে চাপিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করছে। এটা ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র।”
তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও এক্স (X)-এ লিখেছেন,
“বাংলায় পিছনের দরজা দিয়ে এনআরসি চালু করতে চাইছে বিজেপি।”
বিজেপির পাল্টা দাবি, তৃণমূল ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে।