গাজা যুদ্ধ থামাতে নতুন উদ্যোগে একসঙ্গে কাজ করছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। একইসঙ্গে বিতর্কিত ‘আব্রাহাম চুক্তি’র পরিসর বাড়ানোর দিকেও নজর দিচ্ছেন তারা। ইসরাইলি গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, প্রায় ২০ মাস ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধে নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়াচ্ছেন ট্রাম্প।
সূত্র বলছে, যুদ্ধ বন্ধের শর্ত হিসেবে গাজা থেকে হামাসকে সরিয়ে চারটি আরব দেশের যৌথ প্রশাসনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এই দেশগুলোর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিশরের নাম জানা গেলেও বাকি দুটি দেশের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। একইসঙ্গে গাজা পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে স্বেচ্ছায় অভিবাসনপ্রত্যাশী ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তাবও রয়েছে।
ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু ফোনালাপে যুদ্ধ অবসানের ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। আলোচনায় যুক্ত ছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ইসরাইলি কৌশলমন্ত্রী রন ডারমারও। পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে যুদ্ধ শেষ করতে পদক্ষেপ নিতে পারে ইসরাইল।
এই প্রস্তাবে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি ইসরাইলের আনুষ্ঠানিক সমর্থন চাওয়া হয়েছে। এর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিম তীরের নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে ইসরাইলি সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি দিতে পারে। এতে সৌদি আরব ও সিরিয়া ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে এগোতে পারে বলে মনে করছে হিব্রু গণমাধ্যম ইসরাইল হায়োম।
তবে পরিকল্পনার পেছনে রাজনৈতিক হিসাবও রয়েছে। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতির মামলার নিষ্পত্তির শর্তে যুদ্ধ থামাতে সম্মত হতে পারেন তিনি—এমন আলোচনাও উঠেছে। নেতানিয়াহুর জোট ‘ফ্রেঞ্চ ল’-এর মতো আইন এনে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা তৈরির চিন্তাভাবনাও করছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। ট্রাম্পের সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া বার্তাগুলোকে এই পরিকল্পনার জন্য জনমত গঠনের কৌশল হিসেবে দেখছেন অনেক বিশ্লেষক।
এদিকে কায়রোয় চলমান শান্তি আলোচনা এখনও অচলাবস্থায়। হামাসের দাবি, ইসরাইল প্রতিনিধি না পাঠালে তারা জ্যেষ্ঠ কোনো নেতাকে আলোচনায় পাঠাবে না। বর্তমানে হামাসের হাতে অন্তত ৫০ জন ইসরাইলি জিম্মি রয়েছে, যাদের মধ্যে প্রায় ২০ জন জীবিত বলে মনে করছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।