আধুনিক জীবনযাত্রা ও অতিরিক্ত মানসিক চাপ স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেড়েছে, বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে। কর্মব্যস্ততা, অনিয়মিত ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, যার ফলে মানুষ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। স্ট্রোক তেমনই একটি রোগ, যা যেকোনো বয়সে ও যেকোনো মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে। তবে সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, পুরুষদের তুলনায় নারীরাই এ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।
সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মহিলাদের মধ্যে স্ট্রোকের প্রবণতা কম বয়সে পুরুষদের তুলনায় বেশি বা তুলনামূলক তবে পরবর্তীতে, মধ্যবয়সি মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের স্ট্রোকের প্রবণতা বেশি। আবার ৮৫ বছরের কম বয়সি পুরুষদের স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি৷ কিন্তু এই বয়সের পরে মহিলাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি অনেক বেশি ।
হরমোনজনিত পরিবর্তন: গর্ভধারণ, গর্ভনিরোধক ওষুধ এবং মেনোপজের পর হরমোন ভারসাম্য পরিবর্তন হয়, যা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
বিষণ্ণতা ও মানসিক চাপ: নারীদের মধ্যে বিষণ্ণতা ও উদ্বেগের হার বেশি, যা স্ট্রোকের বড় একটি ঝুঁকি।
মাইগ্রেন: মাইগ্রেন, বিশেষ করে অরা-যুক্ত মাইগ্রেন, নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং এটি স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
ধূমপান ও স্থূলতা: এসব অভ্যাস নারীদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি দ্বিগুণ করে তুলতে পারে, বিশেষ করে যদি অন্য ঝুঁকিও থাকে।
রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস: নিয়ন্ত্রণে না থাকলে, নারীদের ক্ষেত্রে এই রোগগুলো স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়ায়।
প্রতিরোধের উপায়:
নিয়মিত ব্যায়াম
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
ওজন নিয়ন্ত্রণ
ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য বর্জন
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা।
সচেতনতা ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনই হতে পারে সুরক্ষার মূল চাবিকাঠি।
চিকিৎসকরা বলছেন, দৈনিক ১০ ঘণ্টার বেশি বা খুব কম ঘুম, উভয়ই স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। ১০ ঘণ্টার বেশি ঘুমালে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৬৩ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। আর প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি রাতে ৭ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। এছাড়াও ঘুমের সময় যারা নাক ডাকেন, তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি আরও বেশি।
মাইগ্রেনের প্রবণতা যা স্ট্রোকের আরেকটি ঝুঁকির কারণ। মাইগ্রেন থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ না খাওয়া উত্তম। বুক ধড়ফড়, শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরানো ও বুকব্যথা এগুলো হলো অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশনের লক্ষণ। এ সমস্যায় অস্বাভাবিক হৃৎস্পন্দন হয়। এটা রক্ত জমাটবাঁধা, স্ট্রোক, হার্ট ফেইলিউর ও অন্যান্য জটিলতার ঝুঁকি বাড়ায়। যাদের এ সমস্যা রয়েছে, তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি পাঁচ গুণ বেশি।