টাঙ্গাইলে বিএনপির শক্ত অবস্থান থাকলেও গত ১৬ বছর দলটি চাপে ছিল। মূল শহরে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। নেতা-কর্মীরা মামলায় জর্জরিত ছিলেন। তবে গত বছরের ৫ আগস্টের পর চিত্র পাল্টে গেছে। পুরো টাঙ্গাইলে রাজনীতির মাঠ এখন বিএনপির নিয়ন্ত্রণে। জেলার আটটি সংসদীয় আসনের মধ্যে সাতটিতেই বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী সক্রিয়, ফলে বেড়েছে কোন্দল।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রকাশ্যে কার্যক্রম চালাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। বিভিন্ন কর্মসূচির পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিচ্ছে। ইতিমধ্যে তারা আটটি আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে। নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কমিটি করেছে। গণ অধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন মাঠে থাকলেও তাদের নির্বাচনী তৎপরতা নেই। তবে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর (বীর উত্তম) কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ তৎপর জেলার কয়েকটি উপজেলায়। কমিউনিস্ট পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ বাম দলগুলোর তেমন তৎপরতা নেই।
দলগুলোর হালচাল
জেলা বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০২২ সালের ১ নভেম্বর। সে সম্মেলনে কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে হাসানুজ্জামিল শাহীন সভাপতি ও ফরহাদ ইকবাল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় তিন বছরেও দলটির পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি হয়নি। এই জেলায় দলের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে একমত হতে পারেননি, তাই পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদিত হয়নি। দলটির কোনো জেলা কার্যালয় নেই। একেক নেতা একেক স্থানে ব্যক্তিগত অফিস করেছেন। সেখান থেকে নিজেদের অনুসারীদের নিয়ে চালাচ্ছেন কার্যক্রম।
আওয়ামী লীগ গত ১৬ বছর অবৈধ বালুর ঘাট, হাটবাজার, পরিবহন খাতসহ আয়ের বিভিন্ন উৎস দখলে রেখেছিল। ৫ আগস্টের পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা সেই জায়গা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন ব্যবসায়িক, পেশাজীবী, সামাজিক সংগঠনের কমিটি বিএনপির নেতা-কর্মীরা দখলে নিয়েছেন।
জেলা বিএনপিতে এখন দুটি ধারা স্পষ্ট। এক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান। অপর পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন (টুকু)। সুলতানের বড় ভাই কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু। তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে ১৭ বছর কারাগারে ছিলেন। উচ্চ আদালতের আদেশে গত ডিসেম্বরে মুক্তি পান তিনি। সালামের মুক্তির পর চাঙা হয়েছে সুলতানের অনুসারীরা। দুই পক্ষের বিভক্তি শুধু মূল দল বিএনপি নয়; সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনেও প্রভাব পড়েছে। প্রতিটি সংসদীয় আসনে রয়েছে এই বিভক্তি। দলের ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ (টিটো) অনুসারী একটি পক্ষ আছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, এমনকি ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে চলে গেছেন। বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। দলের জেলা ও উপজেলার কার্যালয়গুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সাবেক মন্ত্রী ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেনসহ কয়েক শ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় দলের জেলা শাখার সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান গত অক্টোবরে মারা গেছেন। সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ভারতে অবস্থান করছেন বলে ঘনিষ্ঠজনেরা নিশ্চিত করেছেন।
টাঙ্গাইলে জাতীয় পার্টির তৎপরতা দেখা যায় না। তবে দলটির নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যেই আছেন। জেলার আটটি আসনের কোনো প্রার্থীই তৎপর নয়। তবে দল নির্বাচনে অংশ নিলে জাতীয় পার্টি জেলার প্রতিটি আসনে প্রার্থী দেবে বলে নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন। জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘নির্বাচন হবে কি হবে না, তার নিশ্চয়তাই নেই। তাই আমরা এখনো মাঠে নামিনি। নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলে জাতীয় পার্টি জেলার আটটি আসনেই কাজ শুরু করবে।’ তিনি টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসন থেকে প্রার্থী হবেন বলে জানালেন।
কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সরকারের প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও অবাধ নির্বাচনী পরিবেশ থাকলে জেলার প্রতিটি আসনে প্রার্থী দেবে বলে জানিয়েছে। দলের প্রতিষ্ঠাতা কাদের সিদ্দিকী তাঁর নিজ এলাকা টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনে দলীয় বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর বড় ভাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগে যোগদান না করলেও ছোট ভাইয়ের সঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। লতিফ সিদ্দিকী আগামী নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন।
৫ আগস্টের পর জামায়াতে ইসলামী টাঙ্গাইলে খুবই তৎপর। জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন ইস্যুতে বেশ কয়েকটি বড় বড় সমাবেশ করেছে। উপজেলা ইউনিয়ন পর্যায়ে কাজ করছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। দলীয় প্রার্থীরা নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করেছে নিজ নিজ আসনে।
এনসিপি ইতিমধ্যে জেলা কমিটি এবং ১০টি উপজেলায় কমিটি গঠন করেছে। দলীয়ভাবে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী ঠিক করা না হলেও চারটি আসনে চারজন কেন্দ্রীয় নেতা নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে দলটির নেতারা জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ি)
এ আসনে ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম (স্বপন)। দুবারই তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাকের কাছে পরাজিত হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি মনোনয়ন দেয় দলের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সরকার শহীদুল ইসলামকে। তিনি মারা গেছেন। এবার নির্বাচনে ফকির মাহবুব আনাম মনোনয়ন চাইছেন।
এ ছাড়া মনোনয়ন চাইছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ আলী, সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা আশিকা আকবরের ছেলে আফিফউদ্দিন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্নেল (অব.) আসাদুল ইসলাম (আজাদ) ও আইনজীবী শাহাজাহান কবীর।
জামায়াতের প্রার্থী মধুপুর কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোন্তাজ আলী। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন হারুন অর রশীদ। এনসিপি থেকে প্রার্থী হবেন দলটির উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক অলিক মৃ।
টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর)
বিএনপির একমাত্র প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু। তিনি ১৯৯১ ও ২০০১ সালে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ছাড়া এখানে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী নেই।
এখানে জামায়াতের প্রার্থী হুমায়ুন কবীর। তিনি এলাকায় নির্বাচনী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য শাকিলউজ্জামান তাঁর দল থেকে প্রার্থী হবেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন থেকে প্রার্থী হবেন মুফতি ফজলে বারী।
টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল)
এ আসনে ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা লুৎফর রহমান খান (আজাদ)। তিনি ১৯৯১ ও ২০০১ সালে দুই দফা বিএনপির মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছিলেন। ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। জয়-পরাজয় যা-ই হোক, এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে তাঁকে বেগ পেতে হয়নি। কিন্তু এবার এ আসনে তিনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন।
কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহীর কমিটির সদস্য ও ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এস এম ওবায়দুল হক (নাসির) দলীয় মনোনয়ন চাইছেন। উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা দুজনের পেছনে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম দলীয় মনোনয়ন চাইছেন।
জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হুসনে মোবারক। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হয়ে রেজাউল করিমকে, গণসংহতি আন্দোলনের হয়ে মোফাখারুল ইসলাম, এনসিপির হয়ে উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাইফুল্লাহ হায়দার প্রার্থী হবেন দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী)
২০০৮ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফর রহমান ওরফে মতিন। এবারও তিনি দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। এদিকে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ (টিটো) এ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী। কালিহাতী বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন এই দুই নেতার দিকে। এ ছাড়া বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সহসভাপতি আবদুল হালিম মিয়া, মালয়েশিয়া বিএনপির সভাপতি বাদলুর রহমান ও জেলা জিয়া পরিষদের সভাপতি এ কে এম আবদুল আওয়াল।
এ আসনে কাদের সিদ্দিকীর ভাই আবদুল লতিফ সিদ্দিকী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন। তিনি এ আসন থেকে পাঁচবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের পর ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। জামায়াতে ইসলামী থেকে প্রার্থী হবেন খন্দকার আবদুর রাজ্জাক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সানোয়ার হোসেন।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর)
চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান। তিনি এখন বার্ধক্যের কারণে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নেই। এ আসনে এখন বিএনপির মনোনয়ন পাওয়ার প্রত্যাশায় মাঠে নেমেছেন অর্ধডজন নেতা। তাঁরা হলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন, জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল, জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছাইদুল হক, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি খন্দকার আহমেদুল হক ওরফে সাতিল, সংরক্ষিত আসনে সাবেক সংসদ সদস্য খালেদা পান্নার ছেলে জিয়াউর রহমান (প্লেটো)।
এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী দলের জেলা আমির আহসান হাবীব মাসুদ। এনসিপি থেকে প্রার্থী হবেন দলের কেন্দ্রীয় সংগঠক আজাদ খান ভাসানী। তিনি মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নাতি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা শাখার সভাপতি আকরাম আলী প্রার্থী হবেন এ আসনে।
টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার)
১৯৯৬ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন বিএনপির সাবেক মন্ত্রী গৌতম চক্রবর্তী। তিনি কয়েক বছর আগে মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন এ আসন থেকে বিএনপির একাধিক প্রার্থীর মনোনয়ন চাইছেন। তাঁরা হলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য নুর মোহাম্মদ খান, যুবদলের সাবেক সহসভাপতি রবিউল আওয়াল (লাভলু), উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম, দেলদুয়ার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম ফেরদৌস হোসেন।
জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী এ কে এম আবদুল হামিদ। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আখিনুর মিয়াকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া এনসিপি মেজর (অব.) মো. সালাউদ্দিন নিজ নিজ দল থেকে মনোনয়ন চাইবেন।
টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর)
বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য দলের কেন্দ্রীয় কমিটির শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী এবারও মনোনয়ন চাইবেন। তিনি এ আসন থেকে চারবার বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ ছাড়া বিএনপি থেকে মনোনয়নের প্রত্যাশায় মাঠে আছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংস্কৃতিক–বিষয়ক সম্পাদক সাইদুর রহমান (সাঈদ সোহরাব), জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান ও সাবেক ছাত্রনেতা আবদুস সালাম খান।
জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে আবদুল্লাহ তালুকদারকে। অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন এ টি এম রেজাউল করিম আল রাজী।
টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল)
এ আসনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী প্রার্থী হবেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। বিএনপির প্রার্থী হবেন দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান। তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়ে ২০০১ ও ২০০৮ সালে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে এ আসন থেকে নির্বাচন করেন। এ ছাড়া উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহাম্মদ হাবীব ও যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাসিম এম খান দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন।
জামায়াতে ইসলামী এ আসনে মাওলানা শফিকুল ইসলাম খানকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে মনোনয়ন চাইবেন আবদুল লতিফ মিয়া।