কুমিল্লার মুরাদনগরের কড়ইবাড়ী গ্রামে মাদক বেচাকেনার অভিযোগে এক হৃদয়বিদারক ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর পুরো গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে আতঙ্ক—পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, গ্রেপ্তার ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেছেন অধিকাংশ পুরুষ।

শুক্রবার (৫ জুলাই) সন্ধ্যায় ময়নাতদন্ত শেষে নিহত রোকসানা আক্তার রুবি ও তার সন্তানদের মরদেহ গ্রামে পৌঁছালেও কবর খোঁড়ার মতো কাউকে পাওয়া যাচ্ছিল না। বাধ্য হয়ে বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রাম পুলিশদের দিয়ে কবর খোঁড়া হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ময়নাতদন্ত শেষে দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও নিহতদের পরিবারের কেউ মরদেহ গ্রহণে আসেননি। পরে বিকেলে রুবির মেয়ে জামাই মনির হোসেন মরদেহ গ্রহণ করেন।

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান জানান, নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা শুক্রবার রাতের মধ্যেই মামলা দায়ের করবেন বলে জানিয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৩ জুলাই সকাল ৯টার দিকে আকুবপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ী গ্রামে এলাকাবাসী একযোগে হামলা চালায় রোকসানা বেগম রুবি, তার ছেলে রাসেল ও মেয়ে জোনাকি আক্তারের ওপর। লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় তিনজনকে। আহত হন রুবির আরেক মেয়ে রুমা।

নিহত রাসেলের স্ত্রী মীম আক্তার জানান, প্রায় ৮০ থেকে ৯০ জন লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে প্রথমে ইটপাটকেল ছোড়ে, এরপর বাড়িতে ঢুকে পড়ে। উঠানে ফেলে পিটিয়ে হত্যা করা হয় রুবিকে। পাশের ঘর থেকে বেরিয়ে এলে মেয়েদেরও পেটানো হয়।

স্থানীয়দের দাবি, নিহতদের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিল। এ নিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে তাদের বিরোধ চলছিল।

এই নৃশংস ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি, তবে পরিস্থিতি থমথমে। আতঙ্কে পুরুষশূন্য গ্রামজুড়ে চলছে নীরবতা আর শোকের ছায়া।

পলিটিকক্স/মি

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version