ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ৫৩টি ড্রোন নিয়ন্ত্রণ পোস্ট ও ৮টি স্টারলিংক স্যাটেলাইট যোগাযোগ টার্মিনাল ধ্বংস করেছে রুশ সেনাবাহিনী। রোববার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসকে এ তথ্য জানান ‘ব্যাটলগ্রুপ ইস্ট’-এর মুখপাত্র আলেকজান্ডার গর্দেয়েভ।
গর্দেয়েভ বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রায় ১৯০ জন সেনা নিহত হয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে একটি সাঁজোয়া যান, ৮টি মোটরযান, ১৩টি ড্রোন নিয়ন্ত্রণ পোস্ট এবং ৮টি স্টারলিংক স্যাটেলাইট টার্মিনাল।’
তিনি আরও জানান, ব্যাটলগ্রুপ ইস্ট ইউনিটগুলো ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ভেদ করে আরও গভীরে অগ্রসর হয়েছে এবং দেশটির দুটি যান্ত্রিক ব্রিগেড ও একটি মেরিন ব্রিগেডের ওপর হামলা চালিয়ে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ঘটিয়েছে।
অন্যদিকে, ‘ব্যাটলগ্রুপ ওয়েস্ট’-এর মুখপাত্র লিওনিদ শারোভ তাসকে জানান, একই সময়ে তাদের বাহিনী ইউক্রেনীয় সেনাদের ওপর অভিযান চালিয়ে ২২০ জনের বেশি হতাহত করেছে এবং ৪১টি ড্রোন নিয়ন্ত্রণ পোস্ট ধ্বংস করেছে।
শারোভ বলেন, ‘আমাদের ইউনিট ২৫টি ড্রোন ধ্বংস করেছে, ধ্বংস করেছে ৪টি গোলাবারুদ ভাণ্ডার, দুটি ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার স্টেশন ও ইউক্রেনীয় বাহিনীর আরও ১৩টি মর্টার ও ৩টি সাঁজোয়া যান।’
খারকিভ ও দোনেৎস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় ৩টি যান্ত্রিক ব্রিগেড, একটি অ্যাসল্ট ব্রিগেড এবং একটি টেরিটোরিয়াল ডিফেন্স ব্রিগেডের ওপর বড় ধরনের আঘাত হেনেছে রুশ বাহিনী বলে দাবি করেন শারোভ। তিনি আরও জানান, তাদের ইউনিটগুলো ফ্রন্টলাইনে নিজেদের অবস্থান উন্নত করেছে।
এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের দোনেৎস্কের জেলেনি গাই এবং দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের মালিয়েভকা গ্রাম দুটি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।
রাশিয়ার দাবি, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাঁচটি ‘হিমার্স’ রকেট এবং ইউক্রেনের পাঠানো ২৫৭টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ জানিয়েছে, শনিবার পর্যন্ত ফ্রন্টলাইনে মোট ৬৯টি সংঘর্ষ হয়েছে এবং ইউক্রেনীয় বাহিনী একাধিক রুশ হামলা প্রতিহত করেছে।
এছাড়া, ইউক্রেনের জাতীয় বার্তা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউ দক্ষিণ-পশ্চিম রাশিয়ার স্তাভরোপল অঞ্চলের একটি রেডিও ও ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানায় দূরপাল্লার ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে তথাকথিত ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে। মস্কোর দাবি, তারা ন্যাটো সম্প্রসারণ ও ‘নাৎসি ভাবাদর্শ’ প্রতিরোধ করতেই এ অভিযান শুরু করেছে।
সূত্র : প্রেস টিভি