বাংলাদেশে বড় ধরনের কোনও দুর্ঘটনা বা বিপর্যয়ের পর হতাহতের সংখ্যা গোপন রাখা কখনোই সম্ভব নয়—এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন।
প্রেস সচিব লিখেছেন, “২০০২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বহু বড় দুর্যোগ নিয়ে রিপোর্ট করা একজন সাংবাদিক হিসেবে আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি, বাংলাদেশে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা গোপন রাখা প্রায় অসম্ভব।” তিনি বলেন, শুরুতে পরিবারগুলো নিখোঁজদের তথ্য দেয়, পরে হাসপাতাল ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তথ্য মেলানোর পরেই স্বজনদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
মাইলস্টোন কলেজের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের প্রতিদিনের উপস্থিতির রেকর্ড ঘেঁটে হিসাব বহির্ভূতদের শনাক্ত করা সম্ভব। গতকাল স্কুল পরিদর্শনের সময় উপদেষ্টারা ক্যাম্পাসেই একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করার নির্দেশ দেন। এই কন্ট্রোল রুম থেকে নিয়মিত হতাহতদের তথ্য হালনাগাদ করে রেজিস্ট্রারের তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। তিনি আরও জানান, প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং বর্তমান ছাত্রদের কন্ট্রোল রুমের কার্যক্রমে যুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এবং আশা করা হচ্ছে আজ থেকেই এটি পুরোপুরি কার্যকর হবে।
প্রেস সচিব জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে আহতদের অবস্থা সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট দিচ্ছে এবং সেনাবাহিনীও এই প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে। তার ভাষায়, “সরকারের পক্ষ থেকে হতাহতের সংখ্যা লুকানোর কোনও ইচ্ছা বা প্রয়োজন নেই।”
তিনি জানান, উপদেষ্টারা গতকাল নয় ঘণ্টা ধরে স্কুলে অবস্থান করেছেন। প্রয়োজনে আরও বেশি সময় থাকতেও তারা প্রস্তুত ছিলেন। শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তারা শক্তি প্রয়োগ করেননি।
প্রেস সচিব শেষ করেছেন গভীর শোক প্রকাশের মাধ্যমে। তিনি বলেন, “প্রাণ হারানো ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা। তারা শহীদ। এটি জাতীয় ট্র্যাজেডি। আসুন আমরা সবাই মিলে ভবিষ্যতের এমন দুঃখজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করি। সরকার এই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।”