জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া যোদ্ধাদের জন্য সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা থাকছে না বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই আজম, বীর প্রতীক।
সোমবার (২১ জুলাই) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “জুলাই যোদ্ধাদের পুনর্বাসনের জন্য কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তবে সেই পুনর্বাসনে ফ্ল্যাট বা চাকরির কোটা অন্তর্ভুক্ত নয়।”
তিনি আরও জানান, পুনর্বাসন হবে ব্যক্তির যোগ্যতা ও চাহিদা অনুযায়ী—যেমন প্রশিক্ষণ দিয়ে হাস-মুরগি, পশু পালন কিংবা মৎস্য চাষে সহায়তা দেওয়া হতে পারে। আত্মকর্মসংস্থানেই মূল জোর দেওয়া হচ্ছে।
উপদেষ্টা বলেন, “সরকার থেকে তাদের মাসিক ভাতা ২০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে, যা মুক্তিযোদ্ধাদের সমান। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রসঙ্গ এখানে আনা অনুচিত। তারা মহান, তাদের অবদান চিরন্তন।”
জুলাই যোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধার সমতুল্য দেখার প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরাও সেভাবে দেখি না। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা পেতে ৩০-৩৫ বছর লেগেছে। ২০০৫ সালেই শহীদদের তালিকা হয়েছে, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেই আজও তালিকাভুক্ত নন।”
চাকরিতে কোটা প্রসঙ্গে আবারও সাফ জানিয়ে তিনি বলেন, “না, কোনো কোটা থাকবে না। যোগ্যতা অনুযায়ী তারা চাকরি পাবেন।”
তিনি জানান, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই অভ্যুত্থান সরকারিভাবে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
১২ ডিসেম্বর শহীদ ও আহতদের দায়িত্ব মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত করা হয়। এরপর ২৮ এপ্রিল গঠিত হয় “জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর”। সরকার ‘জুলাই শহীদ’ ও ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ২০২৫ সালের অধ্যাদেশ জারি করে।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৮৪৪ জন শহীদের গেজেট প্রকাশ হয়েছে এবং আহতদের শ্রেণিভুক্ত করে ‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ শ্রেণিতে ভাগ করে ৩ হাজার ৪৩ জন জুলাই যোদ্ধার তালিকা তৈরি হয়েছে।
সম্প্রতি পাওয়া নতুন তালিকায় আরও ১,৭৬৯ জন অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, যাদের যাচাই-বাছাই শেষে গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে বলে জানান উপদেষ্টা ফারুক-ই আজম।