ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা যুক্তরাজ্যে তাদের মালিকানাধীন সম্পত্তি গোপনে বিক্রি, বন্ধক বা হস্তান্তর করছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-এর যৌথ অনুসন্ধান।

ঢাকার দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলো যখন এদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে, ঠিক তখনই যুক্তরাজ্যের জমি নিবন্ধন প্রতিষ্ঠানে অন্তত ২০টি সম্পদ লেনদেনের আবেদন জমা পড়ে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসিনার শাসনামলে রাষ্ট্রীয় চুক্তি ও ব্যাংক ব্যবস্থার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জন করে তা বিদেশে স্থানান্তর করা হয়।

গার্ডিয়ান জানায়, শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ছেলে ও ভাতিজার প্রায় ১,৪৬৯ কোটি টাকার সম্পত্তি লন্ডনে জব্দ করেছে ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (NCA)।
এছাড়া, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ১৭০ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পত্তিও জব্দ করা হয়, যার মধ্যে ৩০০টিরও বেশি অ্যাপার্টমেন্ট ও বিলাসবহুল টাউনহাউস রয়েছে।

দুর্নীতির অভিযোগ থাকা ব্যক্তিরা এখনও যুক্তরাজ্যে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করছেন, যা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে রিপোর্টটি।

এছাড়া, আনিসুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন চারটি সম্পত্তি বিক্রির প্রমাণ মেলে, যার মধ্যে রিজেন্টস পার্কের পাশে ১৬৩ কোটি টাকার একটি জর্জিয়ান টাউনহাউসও রয়েছে।

বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার ও কারাবন্দি সালমান এফ রহমানের ছেলেও যুক্ত রয়েছেন নতুন আরও তিনটি সম্পদ লেনদেনের আবেদনে, যা এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তাধীন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ড. আহসান মনসুর বলেন, “আমরা জানি সম্পদ বিক্রির চেষ্টা চলছে। যুক্তরাজ্য সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি আরও সম্পদ জব্দের উদ্যোগ নিতে।”

দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেনও গত মাসে NCA-কে আহ্বান জানান, বিপ্লব-পরবর্তী এই সম্পদ স্থানান্তরের প্রবণতা রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version