জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদকালেই শেষ হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, মামলার বাদীদের স্থানীয়ভাবে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে, তাই প্রশাসনকে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি লুটেরা ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেল ৩টায়, নারায়ণগঞ্জের হাজীগঞ্জ নতুন রাস্তা এলাকায় জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে নির্মিত দেশের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ড. আসিফ নজরুল।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
স্মৃতিস্তম্ভটি উদ্বোধন করার আগে উপদেষ্টারা শহীদ পরিবার ও আহতদের সঙ্গে ফুল দিয়ে কুশল বিনিময় করেন। পরে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন তারা। ২১ জন শহীদের নামে স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেন, নারায়ণগঞ্জে ৫৬ জন শহীদ হয়েছে। তাদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা স্বৈরাচারমুক্ত বৈষম্যবিরোধী দেশ পেয়েছি। তাদের পরিবার অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। তাদের সম্মানেই নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রথম শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা শুরু হলো। তারা বন্দুকের মুখে যদি নির্ভীক দাঁড়িয়ে না থাকতো তাহলে আজ স্বাধীনতা আসত না।
উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, সাড়ে ১৫ বছরে দীর্ঘ সংগ্রামে অনেকে নিপীড়ন, গুম, আয়নাঘরে বন্দি হয়েছিল। ’২৪ এর জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সারা দেশের মানুষকে জাগ্রত করেছিল। আপনারা অগ্নি সময়ের সন্তান। দেশে কোনো আধিপত্য শক্তি আসার চেষ্টা করলে দেশের মানুষ তা দমন করবে।
অনুষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদ আদিলের মা তার বক্তব্যে সন্তানের স্মৃতিচারণ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি তার ছেলেসহ সকল শহীদদের বিচার চেয়ে তাদের কবর সংরক্ষণের দাবি জানান।
স্মৃতিস্তম্ভের ফলকে উল্লেখ করা ২১ জন শহীদ হলেন- রিয়া গোপ, মো. রোমান, আরমান মোল্লা, মো. ইরফান ভূইয়া, মো. তুহিন, মো. মোহসীন, মো. জনি, ইব্রাহিম, মো. স্বজন, মো. আদিল, পারভেজ হাওলাদার, মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়া, ছলেমান, ইমরান হাসান, হযরত বিল্লাল, সফিকুল, মো. সজল, মো. মাবরুর হুসাইন, মোহাম্মদ মাহামুদুর রহমান খান, মোহাম্মদ সাইফুল হাসান ও আহসান কবির।