ভারতে বড়দিনকে সামনে রেখে মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়সহ বিভিন্ন রাজ্যে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ওপর ক্রমবর্ধমান হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে ক্যাথলিক বিশপস কনফারেন্স অব ইন্ডিয়া (সিবিসিআই)। জবলপুরে প্রার্থনা সভায় হামলা এবং এক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নারীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। সংগঠনটি এই ঘটনাগুলোকে ভারতীয় সংবিধানে নিশ্চিত করা ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত হিসেবে অভিহিত করেছে। খবর দ্য ওয়্যারের।
বিবৃতি অনুযায়ী, গত ২২ ডিসেম্বর জবলপুরের শক্তিনগর এলাকায় একটি ক্যাথলিক প্রার্থনা সভায় উগ্রপন্থী একদল লোক জোরপূর্বক ঢুকে পড়ে হামলা চালায়। এর আগে ২০ ডিসেম্বরও গোরখপুর এলাকায় একই ধরনের ঘটনা ঘটে।
সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বিজেপি জবলপুর শাখার সহ-সভাপতি অঞ্জু ভরগবী এক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নারীকে শিশুদের সামনেই গালাগাল করছেন এবং তার হাত মুচড়ে ধরে মুখ চেপে ধরেছেন। এই সময় পাশেই এক পুলিশ কর্মকর্তাকে নির্বিকার দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সিবিসিআই এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য দায়ীকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে।
এদিকে ছত্তিশগড়ে বড়দিনের উৎসবের দিন অর্থাৎ ২৪ ডিসেম্বর ‘বন্ধ’-এর ডাক দিয়ে উগ্রপন্থী ডিজিটাল পোস্টার ছড়ানো হচ্ছে। খ্রিষ্টান সংগঠনগুলোর মতে, এই ধরনের উস্কানিমূলক তৎপরতা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়িয়ে আরও বড় সহিংসতার পথ তৈরি করতে পারে। ইউনাইটেড ক্রিশ্চিয়ান ফোরাম (ইউসিএফ) জানিয়েছে, ২০২৪ সালে খ্রিষ্টানদের ওপর হামলার ঘটনা ছিল ৮৩৪টি, আর ২০২৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত এই সংখ্যা ৭০৬টিতে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ছত্তিশগড় ও উত্তর প্রদেশেই সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে জরুরি আবেদন জানিয়েছে সিবিসিআই ও ইউসিএফ। তারা দাবি করেছে, অবিলম্বে ছত্তিশগড়ে ডাকা বন্ধ বাতিল করতে হবে এবং শান্তিপূর্ণভাবে বড়দিন উদ্যাপনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারকে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে হবে। সংগঠনটি স্পষ্ট জানিয়েছে, বড়দিনের মতো পবিত্র উৎসবের আগে গির্জা ভাঙচুর ও প্রার্থনারত মানুষের ওপর হামলা যারা করছে, তারা মূলত ‘জাতিবিরোধী’ শক্তি।
