ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক হিসাব বিশ্লেষণ করে সিআইডি ১২৭ কোটিরও বেশি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে।
বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে এসব অনিয়মিত লেনদেনের সন্ধান মিলেছে বলে জানিয়েছে সিআইডি। এ ঘটনায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অর্থ পাচার সংক্রান্ত অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাতে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আবু তালেব এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে রাহুল এখনো গ্রেপ্তার না হলেও মামলার আলামত গোপন ও অভিযুক্তকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে তার পরিবারের সদস্যসহ একাধিক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। গ্রেপ্তার অভিযানের সময় উদ্ধার বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবইয়ের তথ্য সিআইডি গুরুত্ব নিয়ে পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ শুরু করে।
এতে দেখা যায়, অভিযুক্ত ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু চেক বইয়ে বিভিন্ন পরিমাণ অর্থের কথা উল্লেখ রয়েছে। চূড়ান্ত লেনদেন সম্পন্ন না হওয়া এসব রেকর্ডের সমষ্টিগত মূল্য প্রায় ২১৮ কোটি টাকা। তবে সিআইডির প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, অভিযুক্ত এবং তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক লেনদেন সংঘটিত হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং, সংঘবদ্ধ অপরাধ এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম সংক্রান্ত অর্থায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে।
অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আবু তালেব আরো জানান, বিষয়টি আমলে নিয়ে সিআইডি মানি লন্ডারিং বিষয়ে পৃথক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে। মূল অভিযুক্ত ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা প্রায় ৬৫ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে দ্রুততম সময়ে যেনো বাজেয়াপ্ত করা যায় সে জন্যও যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সিআইডি।
পাশাপাশি এসব অর্থের মূল সরবরাহকারী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করার জন্য সিআইডির অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের পেছনে পরিকল্পনা, অর্থায়ন ও অস্ত্র সরবরাহে কোনো সংঘবদ্ধ ও শক্তিশালী নেটওয়ার্ক সক্রিয় ছিল কি না সে বিষয়েও সিআইডির একাধিক টিম কাজ করছে।
