ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে চার দফা ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে তিনটির উৎপত্তি ছিল নরসিংদীতে এবং একটি ঢাকায়। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে একটি ভূমিকম্প এবং শনিবার (২২ নভেম্বর) দিনের বিভিন্ন সময়ে আরও তিনটি কম্পন ঘটে, যা জনমনে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শনিবার অনুভূত তিনটি কম্পন মূল ভূমিকম্পের আফটারশক হতে পারে। তবে তারা সতর্ক করে বলেছেন, এসব কম্পন ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী ভূমিকম্পের ইঙ্গিতও দিতে পারে, যা ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবাইয়াত কবির বলেন, সাধারণত বড় ভূমিকম্পের পর এক–দুই সপ্তাহ ধরে আফটারশক হতে পারে। আজ তিনটি ছোট ও মৃদু আকারের কম্পন অনুভূত হয়েছে এসবই আফটারশক।
তিনি আরও বলেন, গতকাল যে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল, সেটি ফোরশকও হতে পারে। কারণ সামনে যদি আরও বড় ভূমিকম্প হয়, তাহলে ৫.৭ কে ছোট বলেই ধরা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ হুমায়ুন আখতার বলেন, একদিনে তিনটি ভূমিকম্প হওয়া অস্বাভাবিক নয় এগুলো আফটারশক। মাটির নিচে যে শক্তি আটকে ছিল, তা মুক্ত হচ্ছে। কিন্তু এ পরিস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে সামনে আরও বড় ধরনের ভূমিকম্পের সম্ভাবনা আছে। আমাদের প্রস্তুত হতে হবে।
সকাল ১০:৩৬:১২ মিনিট-মাত্রা ৩.৩, উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর পলাশ (ঢাকা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে ২৯ কিলোমিটার উত্তর–পূর্বে)। সন্ধ্যা ৬:০৬:০৪ মিনিট -মাত্রা ৩.৭, উৎপত্তিস্থল ঢাকার বাড্ডা।সন্ধ্যা ৬:০৬:০৫ মিনিট-মাত্রা ৪.৩, উৎপত্তিস্থল নরসিংদী।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০:৩৮ মিনিটে ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় তীব্র কম্পন অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থলও ছিল নরসিংদী। এতে এখন পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু এবং কয়েকশ মানুষ আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভূমিকম্পগুলো সামগ্রিকভাবে দেশে ভূমিকম্প ঝুঁকির মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা যেমন ঘনবসতিপূর্ণ এবং দুর্বল অবকাঠামোর শহর এ পরিস্থিতি আরও সতর্ক থাকার দাবি জানাচ্ছে।
সতর্কতা ও প্রস্তুতির পরামর্শ:
.ভবনের নিরাপত্তা পরীক্ষা করা,
জরুরি বের হওয়ার পথ নিশ্চিত রাখা,
প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি (প্রাথমিক চিকিৎসা, টর্চ, পানি, জরুরি নম্বর) হাতের কাছে রাখা,
ভূমিকম্পের সময় নিরাপদ স্থানে অবস্থান করার অভ্যাস গড়ে তোলা।
