হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী জামায়াত ছাড়া সব ইসলামী দলকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “জামায়াতের ইসলাম আমাদের ইসলামের সঙ্গে মিলছে না। আমরা মদীনার ইসলাম অনুসরণ করি, তারা মওদুদীর ইসলাম পালন করে।”
শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দাওয়াতুল ইহসান আয়োজিত ‘কওমি মাদ্রাসার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও অবদান’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং জাতীয় উলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হেফাজত আমির এসব মন্তব্য করেন।
জানা যায়, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাদে অন্যান্য ধর্মভিত্তিক দল জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতার দিকে যাচ্ছে। হেফাজত সংশ্লিষ্ট দলগুলোও জামায়াতের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করছে। জমিয়ত বিএনপির সঙ্গে জোট করছে। হেফাজত নেতারা বিএনপির সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে বৈঠক করেছেন।
শনিবার দাওয়াতুল ইহসানের সম্মেলনে জমিয়ত নেতারাও ছিলেন।
সেখানে বাবুনগরী বলেন, ‘অতীতেও বহুবার ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়— এখনও সেই ঐক্যের পরিবেশ তৈরি হয়নি। তাই পরামর্শ হলো— ইসলাম ও ইসলামের মূলধারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন না।
হেফাজত আমির বলেন, ‘কঠিন সময় অতিক্রম করছি, একদিকে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে, অন্যদিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ইসলামী মূল্যবোধের ওপরও নানামুখী আঘাত আসছে। স্পষ্টভাবে বলতে চাই— বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ধর্মীয় মূল্যবোধের জন্য এক অশনি সংকেত। ইসলাম ও বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী।’
জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদুদীর সমালোচনা করেন বাবুনগরী। তিনি বলেন, ‘মওদুদীর গোটা জীবন কেটেছে সাহাবিদের বিতর্কিত করার কাজে।
সাহাবিদের সত্যের মাপকাঠি স্বীকার না করলে, কোরান ও হাদিস বিতর্কিত হয়ে যাবে। তাই বিশ্বের শীর্ষ উলামাদের ফতোয়া, জামায়াতের ইসলাম আর মদিনার ইসলাম নয়।’
হেফাজত ইসলামের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, “মওদুদীর ফেতনা কাদিয়ানিদের চেয়েও ভয়ংকর। কাদিয়ানিবাদ ইসলামের বাইরের ফেতনা, যা সহজেই চেনা যায়, কিন্তু মওদুদীবাদ ইসলামের ঘরের ফেতনা, যার ভয়াবহতা সবাই ধরতে পারে না।”
সম্মেলনে দাওয়াতুল ইহসানের সভাপতি আল্লামা আবদুল আউয়াল সভাপতিত্ব করেন। এতে পাকিস্তানের আলেম আল্লামা ইলিয়াস গুম্মান, হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
