সুদানের আল ফাশির শহরে গণকবরের সম্ভাব্য অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া গেছে নতুন একটি স্যাটেলাইট চিত্রে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক গবেষণা ল্যাবরেটরির (এইচআরএল) একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়। খবরটি জানায় আরব নিউজ।
দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধরত আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) গত ২৬ অক্টোবর গুরুত্বপূর্ণ দারফুর শহরটি দখল করে নেয়। প্রায় ১৮ মাস ধরে অবরোধ থাকার পর শহরটির পতন হয়।
গবেষকরা জানান, প্রকাশিত স্যাটেলাইট চিত্রগুলোতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হত্যা, গণকবরের অস্তিত্ব, রক্তে রঞ্জিত এলাকা এবং একটি মাটির বাঁধ বরাবর দৃশ্যমান মরদেহের প্রমাণ মিলেছে। এই পর্যবেক্ষণগুলো প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ এবং আরএসএফের অনলাইনে পোস্ট করা ভিডিওগুলির সঙ্গেও মিলে যায়।
এইচআরএল এর প্রতিবেদনে মরদেহ অপসারণ কার্যকলাপের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রমাণ পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তারা অন্তত দুটি মাটির অসঙ্গতি শনাক্ত করেছে, যা একটি মসজিদ ও একটি শিশু হাসপাতালের কাছে গণকবরের ইঙ্গিত দেয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হাসপাতাল, মসজিদ এবং শহরের অন্যান্য অংশে মরদেহের মতো বস্তুগুলো অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার বিষয়টি দেখা গেছে, যা নির্দেশ করে যে ওই স্থানগুলোতে ফেলে রাখা লাশ পরে সরানো হয়েছে। এ ছাড়া, আল সৌদি হাসপাতালেও লাশ অপসারণের বিষয়টি স্যাটেলাইট চিত্রে লক্ষ্য করা গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই হাসপাতালটি দখলের সময় ৪৬০ জনেরও বেশি রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের খবর দিয়েছিল।
আল ফাশিরের পতনের পর আরএসএফ শিশু হাসপাতালটিকে এখন আটক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছে। সেখানকার নতুন চিত্রগুলো ওই এলাকায় চলমান গণহারে হত্যার সম্ভাবনা নির্দেশ করে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এইচআরএল আগে শুধুমাত্র ঐতিহ্যবাহী প্রথা অনুযায়ী একক কবর দেওয়ার বিষয় পর্যবেক্ষণ করত। কিন্তু শহরটি দখলের পর থেকে স্যাটেলাইট চিত্রে অন্তত ৩৪টি বস্তুর ক্লাস্টার দেখা গেছে, যা মরদেহের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সংখ্যাটিকে হত্যার সামগ্রিক মাত্রার একটি কম অনুমান হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানে সেনাবাহিনীর প্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহান এবং তার সাবেক ডেপুটি আরএসএফ কমান্ডার মোহাম্মদ হামদান দাগালোর বাহিনীর মধ্যে সংঘাত চলছে। এল ফাশিরের পতনের পর পুরো দারফুর অঞ্চলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। বিচ্ছিন্ন অঞ্চলগুলিতে নজরদারি করার জন্য স্যাটেলাইট চিত্রই অন্যতম প্রধান উপায়।
