আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে ১৮ দফা দাবি পেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলের পক্ষ থেকে গণভোটের ব্যবস্থার কথাও জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১২টা ১০ মিনিটে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে বৈঠকে বসে জামায়াতে ইসলামীর সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল। নেতৃত্ব দেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন এবং অন্যান্য কমিশনাররা। প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক শেষে দুপুর সোয়া ২টায় সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন মিয়া গোলাম পরওয়ার।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিএনপির সাম্প্রতিক প্রস্তাবের কড়া সমালোচনা করেন। তার ভাষায়—“সংসদ নির্বাচনের চার মাস আগেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্টের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলেছি, সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তে তারা যেন অটল থাকেন।”
জামায়াত মনে করে, বিএনপির পক্ষ থেকে আরপিও সংশোধনী পরিবর্তনের দাবি তোলা ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক’। দলটির দাবি, এটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট করার এক অ্যালার্মিং দৃষ্টান্ত, যা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অশনি সংকেত।
বিএনপি সম্প্রতি অভিযোগ করেছে যে কিছু ইসলামী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জামায়াত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। যেসব প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হচ্ছে, তাদের সঙ্গে জামায়াতের কোনো মালিকানাগত সম্পর্ক নেই।”
এর আগে গত রোববার (২৬ অক্টোবর) বিএনপি জানায়, জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করলে দলগুলোকে নিজস্ব প্রতীকে ভোট দেওয়ার বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত আরপিও সংশোধনীর সঙ্গে তারা একমত নয়। আগের বিধান বহাল করার দাবিতে সিইসিকে চিঠি দেয় দলটি। বিএনপির মতে, এই সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন করেছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, “জোট করলেও ভোট দিতে হবে নিজস্ব প্রতীকে—এই সংশোধনীর সঙ্গে আমরা একমত নই। আলোচনা ছাড়াই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার লঙ্ঘন।”
অন্যদিকে, জামায়াত দৃঢ় অবস্থান জানিয়ে বলেছে, সংশোধিত বিধান বহাল থাকলেই নির্বাচন আরও স্বচ্ছ হবে, এবং সেটিই ন্যায্য ও ভারসাম্যপূর্ণ পদক্ষেপ।
