সালমান শাহের মৃত্যুকে এতদিন আত্মহত্যা হিসেবে বিবেচনা করা হলেও, ২৯ বছর পর গত সোমবার আদালত এ ঘটনায় হত্যা মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে এবং তাদের দেশ থেকে বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে সন্তানের হত্যার বিচার দাবিতে লড়াই করে আসা সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী যেন এবার কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন—ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা যেন সত্যি হতে চলেছে।
নীলা চৌধুরী বললেন, খুনের চিহ্ন আর আত্মহত্যার চিহ্ন আলাদা। সেটা তার শরীরেও ছিল। এটা খুন, বোঝাই যাচ্ছিল। প্রমাণও ছিল। সামিরার ঘনিষ্ঠরা পরে তো বলেই দিল কীভাবে খুন করেছে।
এটা পরিকল্পিত খুন। ২৯ বছর ধরেই আমি বলে আসছি, আমার ছেলে আত্মহত্যা করার মতো ছেলে নয়।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা খবর পাই আমার ছেলে অসুস্থ। কিন্তু আমরা যাওয়ার পর বাসায় ঢুকতে দেয়া হয়নি। দীর্ঘসময় অপেক্ষা করে রাখা হয়েছিল।’
এরপর তিনি কয়েকটি প্রশ্ন তুলেন, ‘সামিরার মা ৫ সেপ্টেম্বর কেন ঢাকা এসেছিল? ইমনের (সালমান শাহর ডাক নাম) বিল্ডিংয়ে মৃত্যুর একদিন আগে একটি গাড়ি আসে, বোরখা পরে সেই গাড়িতে কারা ছিল? আমরা পরে শুনেছি। এগুলো তদন্ত করলে সব বের হয়ে আসবে।’‘আমার ছেলের সাদা কাপড়ে রক্তের দাগ ছিল। কিন্তু গলায় কোনো দাগ ছিল না।
পোস্টমর্টেমের বাহানা করে আমার ছেলের পার্টস কেটে নেয়া হয়।’—যোগ করেন নীলা চৌধুরী।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৫ বছরে রহস্যজনক মৃত্যু হয় ঢালিউড চিত্রনায়ক সালমান শাহর। এতদিন এ মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলে উল্লেখ করেছে একাধিক তদন্ত কমিটি। তবে সব তদন্তেই এড়িয়ে চলা হয়েছে সত্যকে। যে কারণে দীর্ঘ ২৯ বছর পর অভিনেতা সালমান শাহর অপমৃত্যু মামলা রূপ নিয়েছে হত্যা মামলায়।
সালমান শাহ হত্যা মামলায় সর্বমোট ১১ জনকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। হত্যা মামলায় প্রধান আসামি নায়কের সাবেক স্ত্রী সামিরা হক। অন্য ১০ আসামি হলেন প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, খলনায়ক ডন, নায়কের সাবেক শাশুড়ি লতিফা হক লুসি, ডেভিড, জাভেদ, ফারুক, মেফিয়ার বিউটি সেন্টারের রুবি, আবদুস সাত্তার, সাজু ও রেজভি আহমেদ ফরহাদ।
