রাজধানীর মিরপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে একটি গার্মেন্টস কারখানা ও একটি কেমিক্যাল গোডাউন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে, তবে এখনও অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। ফলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে ফায়ার সার্ভিস।
নিখোঁজদের খোঁজে স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে মিরপুরের অগ্নিকাণ্ডস্থল। তাদেরই একজন নাসিমা আক্তার। তিনি জানান, তার স্বামী নজরুল ইসলাম গত ১২ বছর ধরে ওই গার্মেন্টস কারখানায় অপারেটর হিসেবে কাজ করছেন। আগুন লাগার খবর পেয়ে তাকে ফোন দিলে তিনি আতঙ্কিত কণ্ঠে শুধু বলেন, “আগুন, আগুন!” — এরপর লাইন কেটে যায়। সেই থেকে স্বামীর ফোন বন্ধ, আর খুঁজে পাচ্ছেন না তাকে।
রেশমা আক্তার নামে আরেকজন বলেন, নিখোঁজ আসমা আক্তার (১৫) আগুন লাগা গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করে। মেয়েটি তার ছেলের শ্যালিকা। তাদের সঙ্গে ১০ নম্বর শিয়ালবাড়িতে থাকে আসমা।
আগুন লাগার পর থেকে তার খোঁজ মিলছে না। এর আগে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে একটি পোশাক কারখানা ও একটি রাসায়নিকের গুদামে আগুন লাগে।
বিকেলে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘তল্লাশি অভিযান এখনো চলমান। পাশের যে কেমিক্যাল গোডাউন রয়েছে, সেখানে এখনো আগুন জ্বলছে। এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
ওখানে কাউকে যেতে দিচ্ছি না। আমরা সর্বোচ্চ প্রযুক্তি দিয়ে, ড্রোন দিয়ে এসব কার্যক্রম করছি।’
আগুনের সূত্রপাতের বিষয়ে তিনি বলেন, এখনো জানা যায়নি। যারা শুরুতে আগুন নেভাতে এসেছেন, তারা রাসায়নিকের গুদাম ও গার্মেন্টস দুই দিকেই আগুন দেখেছেন।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, তিন তলা পোশাক কারখানার নিচতলায় ‘ওয়াশ ইউনিট’ রয়েছে। সেখানে প্রথম আগুন লাগে। সেই আগুন পাশের রাসায়নিকের গুদামে ছড়িয়ে পড়লে সেখানে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর আগুন তিন তলা পোশাক কারখানার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।
