ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রিমা আক্তার (২৩) নামে এক তরুণীর বাঁচার আকুতিভরা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। জটিল শারীরিক রোগে আক্রান্ত রিমা নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বাসিন্দা।

ভিডিওতে রিমা বলেন, তার পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই, অর্থকষ্টে ভুগছেন, এবং নিজের বাবাও তাকে দেখতে আসেন না। শিশুকালে মাকে হারানো রিমা নিজেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চোখভরা কান্নায় তিনি জানান, তিনি বাঁচতে চান।

অসুস্থতা ও প্রিয়জনদের অবহেলা আর দুর্ভাগ্যের শিকার মেয়েটি।
চিকিৎসকরা জানান, মেয়েটি ডায়াবেটিস, চর্মরোগসহ বেশ কিছু জটিল রোগে আক্রান্ত। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসাসহ সর্বতোভাবে মেয়েটির পাশে আছে। বিষয়টি জানানো হয়েছে সমাজসেবা বিভাগকেও।

এদিকে নেত্রকোনার দুর্গাপুরে মেয়েটির বাবার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, মেয়েটি দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। মেয়েটির বিয়েও হয়েছিল। এবার পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে মেয়েটি ময়মনসিংহ হাসপাতালে চলে এসেছেন।

মেডিক্যাল সূত্র জানায়, রিমা বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ২০ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালের চিকিৎসকদের ভাষ্য মতে, গত বৃহস্পতিবার মেয়েটি একাই হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়েছেন।

ডায়াবেটিসসহ তার বেশ কিছু জটিল রোগ ধারা পড়েছে। দুর্দশাগ্রস্ত মেয়েটির করুণ ছবি সম্প্রতি ফেসবুকে প্রকাশ পেলে অনেকের মাঝেই বিষয়টি আলোচনার জন্ম দেয়। সেখানে জানানো হয় মেয়েটির কেউ নেই। মেয়েটি খুবই অসুস্থ। তার টাকা-পয়সাও নেই।

মেয়েটি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিন নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বিরিশিরি ইউনিয়নের বারিকান্দি গ্রামের শাকিল আহমেদের মেয়ে। ৬ বছর বয়সে তার মা মমতাজ বেগম মারা যান। এরপর তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। প্রায় ১০ বছর আগে রিমারও বিয়ে হয় বলে তার বাবা জানান।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রিমা জানায়, তার অনেক অসুখ। কিন্তু তার বাবা কোনো চিকিৎসা করান না। তার সৎমা তাকে যন্ত্রণা দেন। তিনি বাঁচতে চান।

এদিকে রিমার বাবা শাকিল আহমেদ জানান, মেয়েকে তিনি অবহেলা করেননি। তার কাছেই মেয়ে বড় হয়েছে। একসময় রিমার বিয়েও হয়। কিন্তু অসুস্থতার কারণেই রিমার সেই বিয়েও ভেঙে যায়।

রিমার বাবা আরো জানান, গত কয়েক দিন আগে রিমা তাদের না বলে বাসা থেকে চলে এসেছেন। আজ-কালের মাঝেই রিমাকে দেখতে মযমনসিংহ মেডিক্যালে আসবেন।

ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফয়সাল আহমেদ বলেন, মেয়েটি টাইপ-১ ডায়বেটিসে আক্রান্ত। বৃহস্পতিবার মেয়েটি ভর্তি হয়। মেয়েটি নানান জটিল রোগে আক্রান্ত। আছে জটিল চর্মরোগও।

তিনি বলেন, তারা মেয়েটির পাশে আছেন। হাসপাতালের সমাজসেবা বিভাগও বিষয়টি অবহিত।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version