জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তাঁর সফরসঙ্গী প্রতিনিধিদলের সদস্যসংখ্যা নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর দেওয়া তথ্যকে ‘ভুল’ বলে দাবি করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।
শফিকুল আলম জানান, “প্রতিনিধিদলের প্রকৃত সংখ্যা ৬২ জন, যা গত বছরের ৫৭ জনের তুলনায় সামান্য বেশি মাত্র।”
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন।
শফিকুল আলম জানান, নাগরিক সমাজ সংস্থা টিআইবি স্বচ্ছতার জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। তাই এটি খুবই হতাশাজনক যে যাচাই করা তথ্যের বদলে যাচাই করা নয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এমন পোস্টের ওপর ভিত্তি করে একটি প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়েছে।
তিনি আরো জানান, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল শুধু হাসিনা আমলের তুলনায় শুধু ছোটই নয়, বরং অনেক বেশি মনোযোগী, পরিশ্রমী ও ফলাফলভিত্তিকও।
প্রেসসচিব জানান, প্রতিনিধিদলের উদ্দেশ্য হলো বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সমাবেশে বাংলাদেশ এবং এর জনগণের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করা, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক সিদ্ধান্তগুলো গঠিত হয়।
গত পাঁচ দিনে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা অন্তত এক ডজন উঁচু স্তরের বৈঠক করেছেন, যার মধ্যে ছয়জনের বেশি রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনাও রয়েছে।
তিনি জানান, টিআইবি ভুলভাবে দাবি করেছে যে প্রতিনিধিদলের সদস্য সংখ্যা ১০০ জনেরও বেশি। প্রকৃত সংখ্যা ৬২, যা গত বছরের ৫৭ জনের তুলনায় সামান্য বেশি। কারণ গত বছরের সংখ্যায় প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে ভ্রমণকারী ছয়জন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।
তিনি আরো জানান, এই বছরের প্রতিনিধিদলের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নিরাপত্তাকর্মী রয়েছেন। আওয়ামী লীগ সমর্থকদের কাছ থেকে সম্ভাব্য হুমকির মধ্যে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তাদের উপস্থিতি অপরিহার্য। এর পাশাপাশি প্রতিনিধিদলকে পর্যাপ্ত সুরক্ষা দিতে অনেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা ১৬ ঘণ্টার শিফটে কাজ করছেন।
শফিকুল আলম বলেন, সরকার স্বীকার করে যে প্রতিনিধিদলের আকার নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তবে এই বছরের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ বাংলাদেশের জন্য ব্যতিক্রমী তাৎপর্যপূর্ণ।
এমন এক সময়ে যখন বিভিন্ন পক্ষ দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টায় লিপ্ত। এর মধ্যে জুলাইয়ের বিদ্রোহকে ভুলভাবে উপস্থাপন করার একটি সমন্বিত প্রচারণাও রয়েছে। তা ছাড়া শক্তিশালী এবং সক্রিয় আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা কেবল কৌশলগত নয়, বরং প্রয়োজনীয়।
তিনি জানান, আওয়ামী লীগ ও তার মিত্ররা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং জুলাই অভ্যুত্থান সম্পর্কে ভুল তথ্য প্রচার করতে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করছে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের বিরুদ্ধে তারা তদবির করছে। কিছু আন্তর্জাতিক মহল তাদের নীরব সমর্থনও করছে।