কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতীয় বিএসএফের গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই এবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) চাকরি পেয়েছেন।
আজ লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম আনুষ্ঠানিকভাবে আরফান হোসেনের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন আয়োজিত নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তিনি সফল হন।
এইচএসসি পাস করা আরফান হোসেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের দক্ষিণ রামখানা কলোনিটারী গ্রামের বাসিন্দা। বাবা নুর ইসলাম পেশায় দিনমজুর, মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। পরিবারের আরও দুই ভাই জাহান উদ্দিন পড়ছেন অনার্সে ও আক্কাস আলী পড়ছেন এইচএসসিতে আর দুই বোন মালেকা খাতুন ও কাজলী আক্তারের বিয়ে হয়েছে।
ফেলানীর ভাই আরফান হোসেন বলেন, বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল দেশের জন্য কাজ করা। ফেলানী হত্যার পর মানুষ যে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকেই আমাদের ইচ্ছা ছিল বিজিবিতে যোগ দেওয়ার। আজ সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো। বিজিবিকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে দেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য।
ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ভারত থেকে ফেরার পথে আমার মেয়েকে গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে দেশবাসী আর বিজিবি সবসময় আমাদের পাশে ছিলেন। দোকান করে দিয়ে সহায়তা করেছে। আজ আমার ছেলে মেধা ও যোগ্যতায় বিজিবিতে সুযোগ পেল। এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।
লালমনিরহাট ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, “বিজিবি সবসময় ফেলানী খাতুনের পরিবারের পাশে রয়েছে। তার ছোট ভাই নিয়োগ পরীক্ষায় সফল হয়ে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগদান করবেন। আমরা বিশ্বাস করি, প্রশিক্ষণ শেষে তিনি দক্ষ সদস্য হিসেবে দেশের সেবায় অবদান রাখবেন।”
তিনি আরও যোগ করেন, “ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা যেন আর না ঘটে, এজন্য বিজিবি সীমান্তে সর্বদা সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।”
