প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি পুনরায় নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য মুনির সাতোরির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
প্রধান উপদেষ্টা সফরকারী প্রতিনিধিদ লকে বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করেছি। এটি রমজানের ঠিক আগে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, জনসাধারণ বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে নির্বাচনী উৎসাহ বাড়ছে, কারণ দীর্ঘদিন পর—কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দশকেরও বেশি সময় পর—ছাত্র সংসদ নির্বাচন আবার শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, সাধারণ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, পরিষ্কার, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর হবে। কিছু শক্তি এখনও নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে, তবুও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্ধারিত সময়সূচি অনুসারে তা নিশ্চিত করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
প্রধান উপদেষ্টা আত্মবিশ্বাস ব্যক্ত করেন বলেন, তরুণ ভোটাররা রেকর্ড সংখ্যায় ভোট দেবেন, কারণ ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই প্রথমবারের মতো তাদের অনেকেই ভোট দেবেন।
“ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ এক নতুন সূচনার সাক্ষী হবে। এটি আমাদের ইতিহাসের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে—জাতির জন্য একটি নতুন যাত্রা” তিনি বলেন।
ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায়, প্রধান উপদেষ্টা এবং এমপিরা সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের অব্যাহত সমর্থন এবং চলমান রোহিঙ্গা মানবিক সংকট নিয়ে মতবিনিময় করেন।
সফররত এমপিরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আসন্ন নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হতে পারে। বাংলাদেশ হয়তো সেই কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি যেখানে বিষয়গুলো সঠিক দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বাংলাদেশে তাদের দৃঢ় সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং দেশে আশ্রয় নেওয়া দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর সহায়তায় তহবিল বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক তহবিল সংকটের কারণে শিবিরগুলোর স্কুল কার্যক্রম—বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায়, শরণার্থী শিবিরে শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী প্রতিনিধিদলকে জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে ইতোমধ্যে শ্রমখাতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়ন হয়েছে।