ইসরায়েলের আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে হয়ে পড়ার বিষয়টি অবশেষে প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। গাজায় চলমান যুদ্ধ ও কট্টর ডানপন্থি নীতির কারণে ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে তিনি জানিয়েছেন, ইসরায়েলকে এখন স্বনির্ভর অর্থনীতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েলের অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা এক ধরনের বিচ্ছিন্নতার মধ্যে যাচ্ছি। তাই এমন এক অর্থনীতির পথে হাঁটতে হবে যেখানে স্বনির্ভরতার বৈশিষ্ট্য থাকবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাইরের ওপর নির্ভরতা কমাতে ইসরায়েলকে নিজেদের অস্ত্র নিজেকেই তৈরি করতে হবে।
দীর্ঘদিন ধরে কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে আসছিল নেতানিয়াহুর সরকার। তবে মাসের পর মাস সতর্কবার্তা উপেক্ষা করার পর তার এই বক্তব্যকে বড় ধরনের স্বীকারোক্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইসরায়েলের অর্থনৈতিক দৈনিক দ্য মার্কারও নেতানিয়াহুর উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে—দেশ এখন রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতার মধ্যে আছে এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাজ্য, স্পেন ও কানাডা ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করেছে। পাশাপাশি ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে ও স্পেনসহ কয়েকটি দেশ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এদিকে নেতানিয়াহুর এই মন্তব্যে বিরোধী নেতা ইয়াইর লাপিদ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এক্স-এ দেওয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, “বিচ্ছিন্নতা কোনো ভাগ্য নয়, বরং নেতানিয়াহুর ব্যর্থ নীতির ফল। তিনি ইসরায়েলকে তৃতীয় বিশ্বের দেশে পরিণত করছেন।”
অন্যদিকে, গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে। অক্টোবর ২০২৩ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পুরো গাজা উপত্যকা, ছড়িয়ে পড়েছে দুর্ভিক্ষ।
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরেই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা চলছে।