বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, লোকসানগামী কোনো ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বোনাস পাবেন না।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, যদি কোনো ব্যাংকের মূলধন ১০ শতাংশের নিচে নেমে যায় এবং প্রভিশন ঘাটতি থাকে, তাহলে তারা ডিভিডেন্ড বা বোনাস দিতে পারবে না। এ ছাড়া, তিন মাসের ঋণ অনাদায়ী থাকলে সেটিকে নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে ধারাবাহিকভাবে কাজ চলছে। গত কয়েক বছরে অর্থ ব্যবস্থায় যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল, তা কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করা হচ্ছে এবং এতে আংশিক সফলতাও এসেছে।
প্রবাসী আয়ের লিকেজ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, আগে হুন্ডির মাধ্যমে প্রায় ৩০ শতাংশ অর্থ বাইরে চলে যেত, তবে বর্তমানে তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে।
তিনি জানান, আমদানি পরিমাণে খুব একটা পরিবর্তন না হলেও মূল্য কমে এসেছে। মূল্য বাড়িয়ে যারা অর্থ পাচার করত, এখন তারা দেশে নেই। ফলে ব্যয়ও কমেছে। আগে যেভাবে অর্থ পাচার হতো, এখন সেভাবে আর হয় না। এর পেছনে কাজ করছে সুশাসন। যার ফলে রিজার্ভও বেড়েছে।
ডলার বাজার নিয়ে গভর্নর বলেন, গত এক মাসে বাজার থেকে এক বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, কিন্তু এতে ডলারের দাম বাড়েনি।
তিনি আরও বলেন, ডলার সংকট না থাকলেও টাকার সংকট রয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কাজ করছি, আরও করতে হবে। এটা একদিনে সম্ভব নয়, সময় লাগবে। আগস্টে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। তবে আমাদের লক্ষ্য, মূল্যস্ফীতিকে ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা।
খেলাপি ঋণ প্রসঙ্গে গভর্নর জানান, জুন মাসের প্রতিবেদনে প্রায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত খেলাপির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে রোববার থেকে সরকারের সঙ্গে পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করার আলোচনা শুরু হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এক থেকে দুই বছরের মধ্যেই এসব ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াবে, যা কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আমানতকারীদের জন্যও ইতিবাচক হবে।
