রাজনৈতিক বিশ্লেষক আশরাফ কায়সার বলেছেন, দেশের সর্বাধিক সুবিধা অর্জনের জন্য সময়মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। তিনি বলেন, নির্বাচন স্থগিত করা দেশের জন্য ক্ষতিকর, কারণ এটি রাজনৈতিক আস্থা হ্রাস করে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করে, যা পুরো প্রক্রিয়াকেই প্রভাবিত করে।

শনিবার (২৩ আগস্ট) বেসরকারি টেলিভিশনের এক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

ভারত প্রসঙ্গে আশরাফ কায়সার বলেছেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি এবং অর্থনীতিতে ভারত এক নম্বার ইস্যু।

আপনি খেয়াল করে দেখেন, যে যে জায়গায় ভারত বাধা সৃষ্টি করেছে, বাংলাদেশের সক্ষমতা সেই জায়গাগুলোতে বেড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন প্রতিটি দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নির্বাচনের সময়কাল আমরা জেনে গেছি। আমরা মাঠের পরিবেশ দেখতে পাচ্ছি।

প্রশাসন এবং পুলিশের অবস্থা ভালো না এবং এই মিলিয়ে আপনি যখন নির্বাচনের দিকে যাবেন মানুষের ভেতরে এত সংশয় থাকলে, অনিশ্চয়তা থাকলে নির্বাচনের পরিবেশটি কী করে তৈরি হবে? কাজেই সরকারের দায়িত্ব, মানুষের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনা যে আমরা একটি সঠিক নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি।’
আশরাফ কায়সার বলেন, দেখুন, নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা তারা অনেক বেশি করেছেন। এটি তো তাদের কাজ ছিল না। তিনি প্রথম মাসেই বলতে পারতেন, আমি দেড় বছর পর বা দুই বছর পর নির্বাচন করব।

তিনি বলেন, তখন মানুষ সরকারের কার্যক্রম প্রতি মাসে স্কুলের রিপোর্ট কার্ডের মতো দেখতে পারত। তিনি আরও যোগ করেন, নির্বাচন না হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়, যা পুরো প্রক্রিয়াকেই প্রভাবিত করে। গত ১৬ বছরে ভোটের সুযোগ পায়নি মানুষ; তাদের মধ্যে আশা, আকাঙ্ক্ষা ও অংশগ্রহণের আগ্রহ রয়েছে। আমরা চাই, মানুষ যেন স্বাধীনভাবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে—ফলাফল যাই হোক।

তিনি আরো বলেন, একটি নির্বাচনের সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য হলো— নির্বানের ফলাফলের অনিশ্চয়তা। আমরা সেই অনিশ্চয়তাই দেখতে চাই। কিন্তু আপনি যদি দেখেন, নিশ্চিতভাবে জানা যাচ্ছে কে বিজয়ী হবে—তাহলে নির্বাচনের বৈচিত্র হারিয়ে যায়। এই অবস্থায় সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোরও দায়িত্ব রয়েছে। তারা জনগণকে কী ধরনের রাজনীতি অফার করছে।’

আশরাফ কায়সার বলেন, একটি দুঃখজনক দিক হলো—যে ইশতেহার, কর্মসূচি বা ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করছে, তা নিয়ে এখনও আমরা তেমন কোনো আলোচনা শুনতে পাইনি। বর্তমানে কেবল ‘সংস্কারের’ কথা শোনা যাচ্ছে। তবে প্রশ্ন থাকে, সেই সংস্কার কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে এবং কতদিনের মধ্যে তা সম্পন্ন হবে—এর কোনও স্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই।

তিনি বলেন, দেশে প্রায় দেড় কোটি বেকার মানুষ রয়েছে। তাদের কর্মসংস্থান কীভাবে নিশ্চিত করা হবে—এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো থেকে জানা দরকার। শুধু সংস্কারের কথাই নয়, তা বাস্তবায়ন কখন ও কিভাবে হবে—এই স্পষ্ট পথনির্দেশনাও থাকা আবশ্যক। যদি তা না থাকে, মানুষ ভোট দিয়ে কাকে বেছে নেবে?

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version