কুয়েতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বিষাক্ত মদ তৈরির অভিযোগে নিরাপত্তা বাহিনী ৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনায় প্রাণঘাতী মদপানে এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে এক বাংলাদেশি নাগরিকও রয়েছেন। জানা গেছে, তিনি একটি অপরাধচক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। রোববার (১৭ আগস্ট) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, রাজধানীসহ বিভিন্ন আবাসিক ও শিল্প এলাকায় পরিচালিত ছয়টি মদের কারখানা ও চারটি প্রস্তুতিহীন কারখানা জব্দ করা হয়েছে। তদন্তে নেপালি এক সদস্য জানিয়েছেন, কীভাবে এই মদে প্রাণঘাতী মিথানল মিশিয়ে বাজারজাত করা হতো।
মুসলিম প্রধান দেশ কুয়েতে মদ উৎপাদন বা আমদানি আইনত নিষিদ্ধ। তবে গোপনে স্বাস্থ্যবিধি ও নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করেই এসব অবৈধ কারখানায় মদ তৈরি হচ্ছিল। ফলে তা পানকারীদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে।
এর আগে কুয়েতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, মিথানল বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৬০ জন। তাদের মধ্যে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং অন্তত ৫১ জনের জরুরি ভিত্তিতে কিডনি ডায়ালাইসিস করতে হয়েছে। ৩১ জনকে ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়েছে। মৃতদের অধিকাংশই এশীয় নাগরিক।
কুয়েতে ভারতীয় প্রবাসীই সবচেয়ে বড় সম্প্রদায়। দেশটির ভারতীয় দূতাবাস জানিয়েছে, সাম্প্রতিক ঘটনায় প্রায় ৪০ জন ভারতীয় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যদিও সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা হয়নি, তবে কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে এবং অনেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন বলে জানিয়েছে দূতাবাস।
আল জাজিরার তথ্যমতে, মিথানল একটি বর্ণহীন কিন্তু মারাত্মক বিষাক্ত অ্যালকোহল, যা শিল্প ও গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত হয়। এটি সহজে চেনা যায় না, আর এর বিষক্রিয়ার লক্ষণ দেরিতে প্রকাশ পায়— যেমন বমি, পেটব্যথা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি। সময়মতো চিকিৎসা না হলে এ ধরনের বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হার ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
