পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার আগামী ২৩ আগস্ট ঢাকা সফরে আসছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের দ্রুত উন্নয়ন ও কূটনৈতিক উষ্ণতার প্রেক্ষাপটে এ সফরকে দুই দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাতে জানায়, ইসহাক দারের সফর বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের নতুন অধ্যায় উন্মোচনে ভূমিকা রাখতে পারে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, একসময় একই দেশের অংশ হলেও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর দীর্ঘ সময় দুই দেশের সম্পর্ক শীতল ছিল। বিশেষ করে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে ঢাকা ছিল ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং ইসলামাবাদের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ ছিল সীমিত।
তবে ২০২৪ সালের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পতনের পর এবং তার ভারতে চলে যাওয়ার পর ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্কের মধ্যে উষ্ণতা ফিরে আসে। এ সময় বাণিজ্য, কূটনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতায় অগ্রগতি হয়েছে।
এপ্রিল মাসে ইসহাক দারের ঢাকা সফরের পরিকল্পনা থাকলেও, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার কারণে তা স্থগিত হয়। এবার তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, গত মাসে দুই দেশ কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে সরাসরি সরকার-থেকে-সরকার বাণিজ্য শুরু হয়, পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার টন চাল আমদানি হয় এবং করাচি-চট্টগ্রাম কনটেইনার জাহাজ চলাচল শুরু হয়—যা কয়েক দশকের মধ্যে প্রথম।
ডিসেম্বর ২০২৩-এ কায়রোতে ডি-৮ সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৭১ সাল থেকে ঝুলে থাকা সমস্যাগুলো সমাধানের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। ড. ইউনূস বলেছিলেন, “এসব সমস্যাকে মিটিয়ে সামনে এগিয়ে যাই।”
আগামী ২৩ আগস্টের সফরে দুই দেশের পারস্পরিক সমন্বয় ও সহযোগিতা আরও জোরদার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে কূটনৈতিক মহল মনে করছে।