রুপালি পর্দার আড়ালে লুকিয়ে থাকে অনেক অজানা ও ভয়াবহ বাস্তবতা—কখনো সেগুলো প্রকাশ্যে আসে, কখনো রয়ে যায় অগোচরে। সেই ধারাবাহিকতায় টলিউডে এখন ‘দেখতে সুন্দর’ হওয়ার প্রতিযোগিতা নতুন মাত্রা পেয়েছে। নায়িকাদের মধ্যে প্লাস্টিক সার্জারি, লিপ ফিলার, নোস জব ইত্যাদি যেন হয়ে উঠেছে এক ধরনের অলিখিত নিয়ম। এই অস্বাভাবিক ও উদ্বেগজনক প্রবণতার বিরুদ্ধে এবার মুখ খুলেছেন ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শোলাঙ্কি রায়। সৌন্দর্যের নামে শরীরে ছুরি-কাঁচির ব্যবহার নিয়ে তার খোলামেলা ও সাহসী মন্তব্য ইতোমধ্যেই তোলপাড় ফেলেছে বিনোদন অঙ্গনে।
সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, ‘অনেকেই বলেন আমার মুখ টিভির তুলনায় সিনেমায় দেখতে খারাপ লাগে। আসলে মুখে তো কখনো কিছু করাইনি, ইনজেকশন নিইনি। তাই হয়তো!’
তিনি আরও বলেন, আমি যেহেতু চিরকালই রোগা, তা নিয়েও নানা কটাক্ষ শুনতে হয়েছে আমাকে। এতটাই যে, এক সময় আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরে যায়। পারিবারিক অনুষ্ঠানেও যাওয়া বন্ধ করে দিই। ‘অনুষ্ঠানে গেলেই অনেকে জিজ্ঞেস করতেন আমি এত রোগা হয়ে গেছি কেন। যেন এটা কোনো নতুন ব্যাপার! কিন্তু আমি তো ছোটবেলা থেকেই এমন।’ তবে সবচেয়ে অপমানজনক অভিজ্ঞতার কথাও এদিন অকপটে শেয়ার করেন তিনি। একবার এক পরিচালক তাকে সরাসরি পরামর্শ দেন ব্রেস্ট সার্জারির।
এ বিষয়ে শোলাঙ্কি বলেন, ‘নায়িকা হতে গেলে একটু ক্লিভেজ থাকা দরকার’। এই কথাটা শুনে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। যদিও আমি যথেষ্ট ম্যাচিওর ছিলাম, তাই কথাটা এড়িয়ে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলাম। কিন্তু ভাবুন তো, এই কথাটা যদি কোনো নতুন বা কম বয়সী মেয়ে শুনত! কতটা ভেঙে পড়ত সে।’
অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘আজও সেই ঘটনা মাথায় গেঁথে আছে। প্রভাব তো ফেলেছিলই, না হলে এতদিন পরও এটা নিয়ে বলতাম না। বাইরে থেকে শুনলেই একরকম লাগে; কিন্তু ভেতরে ভেতরে যে কী যন্ত্রণা হয়, সেটা শুধু মেয়েরাই বোঝে।’
তার এই স্বীকারোক্তি শুধু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নয়; বরং ইন্ডাস্ট্রির নীরব যন্ত্রণার এক জোরালো প্রতিবাদস্বরূপ হয়ে উঠেছে গোটা নেট দুনিয়ায়।